এ যেন এক ‘ম্যাজিক’ পিসি সরকারের ! যুবতী ‘মিলিয়ে’ গেলেন দিনেদুপুরে! আশ্চর্য্যজনক এক কাণ্ডে চরম হতভম্ব পুলিশও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মেয়ের বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সেরে ফেলেছিলেন বাবা-মা। ঠিক সেই মেয়েই রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদনপত্র বাড়ি থেকে বের করে প্রেমিকের সঙ্গে চম্পট তরুণীর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে এমনকি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের সাহেবগঞ্জ এলাকায়।এদিকে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভাতার থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে তরুণীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার। যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনো নাগাল পাওয়া যায়নি ওই পাত্রী বা তাঁর প্রেমিক কারও। এদিকে, মেয়েটির এমন কীর্তিতে মাথায় যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে তাঁর বাবা-মার ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়া বছর বাইশের ওই তরুণীর বাড়ি ভাতারের সাহেবগঞ্জ এলাকায়। তরুণী গ্র্যাজুয়েট। তাঁর মামাবাড়ি ভাতারেরই বনপাশ এলাকায়। তরুণীর বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তাঁর বাবা-মাই ঠিক করে ফেলেন। বিয়ের আর মাত্র দিন দ’শেক বাকি ছিল । তাই বিয়ের অনুষ্ঠানের আত্মীদের নিমন্ত্রণের জন্য কার্ডও ছাপিয়ে ফেলেন পরিবারের লোকজন। নিমন্ত্রণপর্বও প্রায় সাড়া হয়ে গিয়েছিল। এমনকী বিয়ের বাজার সেরে ফেলার পাশাপাশি মণ্ডপ ও বাজনা বায়নার টাকাও মিটিয়ে দিয়ে রেখেছে পরিবার ।
এরই মধ্যে নিজের উদ্দেশ্যের কথা গোপন রেখে তরুণী তাঁর বাড়ির লোকজনকে বলেন, “মেয়েদের বিয়ের খরচের জন্য রাজ্য সরকার ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছে। সেই প্রকল্পে আবেদন করলে ২৫ হাজার টাকা অনুদান পাওয়া যায়।” তাই রূপশ্রী প্রকল্পের অনুদান পাওয়ার জন্য নিয়ম মেনে নিজে সশরীরে ভাতার ব্লকের বিডিও অফিসে গিয়ে আবেদন করবে বলে তরুণী বায়না ধরে। সরল বিশ্বাসে তরুণীর বাবা-মা তাতে সম্মতিও দেন। এরপর শুক্রবার দুপুরে লিখিত আবেদনপত্র, বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের প্রতিলিপি সঙ্গে নিয়ে তরুণী তাঁর মামার সঙ্গে ভাতার বিডিও অফিসে যান।
সেখান থেকেই শৌচালয়ে যাওয়ার নাম করে মামাকে বসিয়ে রেখে তরুণী চম্পট দেয়। এদিকে অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ভাগ্নি ফিরছে না দেখে মামাও যথেষ্ট চিন্তিত হয়ে পড়েন। এরপরেই দিদি- জামাইবাবুকে খবর পাঠান তিনি। তাঁরাও গোটা বিডিও অফিস ঘুরে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে শেষে ভাতার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। নিখোঁজ মেয়েটির মামা বলেন, “ভাগ্নির কথা মতোই রূপশ্রী প্রকল্পের অনুদানের জন্যে আবেদন করতে আমি ওকে সঙ্গে নিয়ে বিডিও অফিসে যাই। আবেদনপত্র পূরণের কাজ চলছিল। ওই সময়ে শৌচালয়ে যাওয়ার কথা বলে ভাগ্নি নিজের ভ্যানিটি ব্যাগটা আমাকে ধরতে দিয়ে যায় । এরপর থেকে ভাগ্নি আর ফেরেনি। সে কোথায় গায়েব হয়ে যায়।
পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তন্নতন্ন করে মেয়েটির খোঁজ চালায় বিডিও অফিসে এসে। পুলিশ এমনকি খতিয়ে দেখে বিডিও অফিসের সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও। সেখানেও কোনো হদিশ মেলেনি তরুণীর। তবে কোথায় গেলেন তরুণী? মেয়েটি কি আগে থেকেই তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর পরিকল্পনা করেই এসেছিল বিডিও অফিসে? এ নিয়ে রাত অবধি পরিবারের লোকজন পুলিশকে লিখিতভাবে কিছু না জানালেও পুলিশ কিন্তু তেমনই সন্দেহ করছে।