শিলিগুড়িতে দিনরাত ক্রমশ বেজেই চলেছে হর্ন, চরম অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ
শিলিগুড়ি : শিলিগুড়ির ব্যস্ততম মোড়গুলির মধ্যে অন্যতম হাসপাতাল মোড়। বেশিরভাগ সময় এই এলাকায় যানজট লেগে থাকে। ওই ভিড়ের মাঝে খুঁটিয়ে দেখলে তবেই একটা নোংরা-ছেঁড়া ফ্লেক্সের দিকে নজর যাবে। তাতে লেখা, এখানে হর্ন বাজানো নিষেধ। ফ্লেক্সের ওপরেই সুদৃশ্য বোর্ড। যা বুঝিয়ে দেয়, ওখানে হাসপাতাল রয়েছে। অর্থাৎ নো হর্ন জোন । তবু কে কার কথা শোনে? ওই বোর্ড যেমন কারও নজরে পড়ছে না। তেমনই কেউ আর নিয়ম মানছেন না।
হর্নের ‘চিৎকার’ শুধু হাসপাতাল মোড়ে নয়, শহরের বহু নার্সিংহোমের সামনেও। হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমের আশপাশে হর্ন বাজানোর নির্দেশ না থাকলেও তা মানে না কেউ। এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন শহরবাসী। হাসপাতাল মোড়ে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে টোটো, অটো, বাইক। যানজট থেকে মুক্তি পেতে বারবার হর্ন বাজাতে দেখা গেল এক বাইক আরোহীকে। তাঁকে দেখে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুটারচালক, এক চারচাকার গাড়ির চালকও হর্ন বাজাচ্ছিলেন। তাঁদের সকলের হর্নের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা রজত পাল। বলছিলেন, ‘সামনে হাসপাতাল রয়েছে। মানুষের কাণ্ডজ্ঞান বলে কিছুই নেই।’
ঠিক একই কথা বলতে শোনা গেল অর্জুন সরকারকেও। হাসপাতালের সামনে জরাজীর্ণ ওই ফ্লেক্স দেখে বললেন, ‘কী পরিস্থিতি। কোনও নিয়ম মানার বালাই নেই। প্রশাসনের উচিত এই বিষয়ে নজর দেওয়া। যাতে হাসাপাতালের সামনে বেপরোয়াভাবে কেউ হর্ন বাজাতে না পারেন।’ শিলিগুড়ি কলেজের কাছে এক নার্সিংহোমের সামনে এদিন লাগাতার হর্ন বাজাতে দেখা যায় কয়েকজন তরুণকে। তাঁদের বারণ করতে এসে এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘এভাবে নার্সিংহোমের সামনে এতবার কেউ হর্ন বাজায় নাকি! রোগীর অসুবিধা হতে পারে।’
বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএম) শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক শঙ্খ সেন বলেন, ‘এটা সত্যিই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের তরফে সমস্ত হাসপাতাল, নার্সিংহোমের সামনে নো হর্ন জোন লিখে বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া উচিত।’ ডিসিপি ট্রাফিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের কথায়, ‘আমরা পুরনিগম ও পূর্ত দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে কোথায় কী বোর্ড বসানো হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রশ্ন ওঠে, বোর্ড লাগালেই কি সমস্যা মিটবে? মানুষ সচেতন না হলে এ সমস্যা মেটার নয়, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।