‘ভাড়া’ পড়বে ২০০ টাকা! ট্রলি না-পেয়ে করিডরেই মর্মান্তিক মৃত্যু হল রোগীর, কাঠগড়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল
বেস্ট কলকাতা নিউজ : জরুরি বিভাগ থেকে মেল মেডিসিন ওয়ার্ড৷ পায়ে হেঁটে বড়জোড় দশ মিনিট৷ এইটুকু পথ অসুস্থ রোগীকে নিয়ে যেতে লেগে গেল তিনঘণ্টারও বেশি সময়৷ তাও পুরো পথ যাওয়া সম্ভব হল না৷ করিডরেই শেষ হয়ে গেল ৩৮ বছরের এক যুবকের জীবন৷ চিকিৎসায় চরম গাফিলতি ও ট্রলি নিয়ে দালাল রাজের জেরেই বিশ্বজিৎ চন্দ নামে ওই যুবকের এমনই পরিণতি বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ চরম মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷ এদিনের এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো ব্যাপক হইচই পড়ে যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৷ এদিকে মৃত্যুর দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরই চাপিয়েছে বিশ্বজিতের পরিবার৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে৷

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ চন্দ বাগডোগরার বাসিন্দা। আচমকা বমি ও পেটে ব্যাথার উপসর্গ নিয়ে প্রথমে বাগডোগরার ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসার পরও তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়৷ তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেই মতো রোগীর পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন৷
এদিকে পরিবারের আরোও অভিযোগ, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিশ্বজিতের সেভাবে কোনও চিকিৎসা করা হয়নি৷ সরাসরি তাঁকে মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করার জন্য বলা হয়। সেই সময় বিশ্বজিতের হেঁটে যাওয়ার পরিস্থিতি ছিল না৷ প্রয়োজন ছিল হুইল চেয়ার বা ট্রলির৷ কিন্তু সেই ট্রলি বা হুইল চেয়ারের জন্য প্রায় তিনঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেন বিশ্বজিতের পরিজনরা৷ কিন্তু কিছুই মেলেনি৷ শেষে নিজেরাই ওয়ার্ডের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়৷
পরিবারের সদস্যদের দাবি, হাসপাতালের করিডরে ব্লাড ব্যাংকের কাছে এক কর্মীর কাছে ট্রলির দেখা মেলে৷ ট্রলির জন্য তাঁদের কাছে ২০০ টাকা চাওয়া হয়৷ তাঁরা সেই টাকা দিতে রাজি হন৷ তার পরও তাঁদের ট্রলি দেওয়া হয়নি৷ শেষপর্যন্ত হাসপাতালের করিডরেই শোয়ানো হয় বিশ্বজিৎকে৷ তখন শারীরিক পরিস্থিতি একেবারে আশঙ্কাজনক৷ পরিজনদের দাবি, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় বিশ্বজিৎ চন্দের৷ চিকিৎসায় গাফিলতি ও দালালরাজের জেরে করিডরে রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এই খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়৷ এই নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়৷ খবর যায় মেডিক্যাল ফাঁড়িতে৷ সেখান পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ছুটে আসেন হাসপাতালের আধিকারিকরা। তাঁরা অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।