ভুয়ো ট্রেডিং অ্যাপে বিনিয়োগ অতিরিক্ত রিটার্নের লোভে, হলদিয়ার ১ ইঞ্জিনিয়ার খোয়ালেন ১০ লক্ষ টাকা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : অতিরিক্ত রিটার্নের লোভে ভুয়ো অনলাইন ট্রেডিং অ্যাপের ফাঁদে পড়ে ১০ লক্ষ টাকা খোয়ালেন হলদিয়ার এক তরুণ ইঞ্জিনিয়ার। তিনি আদালত ও পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি হলদিয়া বন্দরে একটি বেসরকারি শিপিং এজেন্সিতে কর্মরত। গত কয়েক মাসে হলদিয়ার ভবানীপুর, হলদিয়া, দুর্গাচক থানায় এই সংক্রান্ত ২৫টির বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কয়েকদিন আগেই হলদিয়া টাউনশিপের এক ব্যক্তি একইভাবে ১০ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। পর পর এই ঘটনা বাড়তে থাকায় পুলিশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, এদের প্রায় প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা বিনিয়োগে রীতিমতো দক্ষ। তারপরও অতিরিক্ত লাভের আশায় শেয়ার-দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে কখনও কখনও সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। টাকা বিনিয়োগ করতে গিয়ে যাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়াচ্ছেন, তাঁরা সিংহভাগই চাকরিজীবী এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ। কেউ ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পসংস্থার পদস্থ আধিকারিক, কেউ শিক্ষক, এমনকী শেয়ার বাজারের হাল হকিকত ঠোঁটস্থ। তারপরও ওঁত পেতে থাকা সাইবার প্রতারকদের খপ্পরে পড়ার আগে পর্যন্ত ঘুণাক্ষরেও টের পাচ্ছেন না তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক হলদিয়ার ভবানীপুর থানা এলাকার নিবেদিতানগরের বাসিন্দা প্রতারিত হয়ে পুলিশ ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণের কাছে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। তাঁকে শেয়ার ট্রেডিংয়ে টাকা ইনভেস্ট করার জন্য প্রলোভন দেখায়। সেবিতে নথিভুক্ত শেয়ার ব্রোকার হাউস বলে পরিচয় দেয়। এরপর ওই ব্রোকারের কথা মতো যুবক মোবাইলে একটি অ্যাপ ইন্সটল করে টাকা লেনদেন শুরু করেন। পর পর কিছু টাকা ফেরতও পান। তা দেখে যুবকের মনে বিশ্বাস তৈরি হয়। ওই সাইবার প্রতারকরা তরুণকে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার টোপ দিতেই তা লুফে নেন তিনি। ওইসময় এককালীন ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বসেন। এক সপ্তাহ পর ওই তরুণ দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্টে ৪০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু ওই টাকা কোনওভাবেই অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে পারছেন না। সন্দেহ হওয়ায় তিনি মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর যোগাযোগ করতে চাইলেও সুইচড অফ দেখাতে থাকে। সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়েছেন বুঝতে পেরে প্রতারিত ইঞ্জিনিয়ারসাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়। হলদিয়ার এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী বলেন, সাইবার প্রতারণার কেসগুলিতে প্রতারণার ধরন দেখে তদন্ত হচ্ছে। হলদিয়ায় একটি শিল্প সংস্থায় সম্প্রতি ২ কোটি টাকা সাইবার প্রতারণা হয়েছিল। পুলিশের চেষ্টায় ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ফেরত পাওয়া গিয়েছে এবং বেঙ্গালুরু থেকে একজন ধরা পড়েছে।

