চন্দ্রকোণায় বাড়ি থেকে উদ্ধার হল বিশালাকার অজগর, আতঙ্কে হুলস্থূল পড়ল এলাকায়
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গৃহস্থ বাড়ির মধ্যেই বিশালাকার অজগর সাপ, আতঙ্কে হুলস্থূল পড়ল চন্দ্রকোণা থানার ধর্মপোতায়। রবিবার রাতে ওই গ্রামের নির্মল পাঁজার বাড়ির মেন গেট দিয়ে প্রকাণ্ড আকারের ওই সাপটি ঢুকে পড়ে। বন দপ্তরে খবর দেওয়া হলে বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী টিমের সদস্য মলয় ঘোষ রাতেই গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করে আনেন। মলয়বাবু বলেন, সাপটি ১০ ফুটেরও বেশি লম্বা। ওজনও ২০ কেজির মতো। এটিকে ইন্ডিয়ান রক পাইথন বলা হয়। সাপটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পরে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেওয়া হবে।
জানা গেছে নির্মলবাবুর পাকা বাড়ি। সেই বাড়ির মেন গেটের সামনে এক মহিলা দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরই অলক্ষ্যে ওই প্রকাণ্ড সাপটি বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ে। নির্মলবাবু বলেন, সাপটি দেখার পরে আতঙ্কে গলা থেকে কোনও শব্দ বের হচ্ছিল না। তবুও কোনওরকমে বন দপ্তরে ফোন করে জানাই। রাতেই বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী টিমের সদস্য সাপটি উদ্ধার করতে আসেন।

ঘাটাল মহকুমার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই ধরনের ইন্ডিয়ান রক পাইথন সাধারণত দেখা যায় না। বন দফতর ও প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, অজগর মূলত গভীর জঙ্গলেই থাকে। তবে খাবারের সন্ধানে তারা প্রায়শই লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসে। অজগর ছোট প্রাণী যেমন ছাগল, খরগোশ, বিড়াল, ইঁদুর, শুয়োর, এমনকি হরিণ শাবকও শিকার করে। অনুমান করা হচ্ছে, এই অজগরটিও খাবারের খোঁজে আশেপাশে থাকা জঙ্গল বা ঝোপঝাড় এলাকা থেকে পথ ভুল করে বা শিকারের পিছু নিতে গিয়ে লোকালয়ে চলে এসেছিল। এই ধরনের প্রাণী যখন তাদের স্বাভাবিক বাসস্থান থেকে দূরে সরে আসে, তখন তা এলাকার বনভূমির চরিত্র বা খাবারের উৎসের ভারসাম্যের পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত হতে পারে।
মলয়বাবু বলেন, অজগর বিষহীন হলেও এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রাণী। এটি শিকারকে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে এবং পুরোটা গিলে খায়। এটি মানুষকে পেঁচিয়ে ধরলে হাড় ভেঙে যেতে পারে, তবে সাধারণত অজগর সহজে মানুষকে আক্রমণ করে না। এই প্রায়-বিপন্ন প্রাণীটিকে হত্যা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অজগর উদ্ধারের এই বিরল দৃশ্য দেখতে রাতেই বহু গ্রামবাসী ভিড় জমান।

