কিছুতেই যেন নিভছে না হিংসার আগুন, মণিপুরে বিক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর খোদ মন্ত্রীর বাড়িতে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ফের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে। মণিপুরের কিছু এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে গত রবিবার রাত থেকেই। ইম্ফল পশ্চিম জেলার এক জায়গায় তিনজন জখমও হন দুষ্কৃতীদের গুলিতে । তারপরই সোমবার বিকেলের দিকে ইম্ফলের চেকন এলাকায় এক স্থানীয় বাজারের দখল নিয়ে সংঘর্ষ বাধে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে। এমনকি অবাধে লুঠ চলে ঘর-বাড়িতে । এছাড়াও আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় কিছু কিছু বাড়িতে। এদিকে এই হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্য়মন্ত্রী এন বীরেন সিং। জানা যায় তাঁদের মধ্যে একজন প্রাক্তন বিধায়ক রয়েছে বলেও। তবে তাতেও বিক্ষোভের অশান্তি মেটেনি । এদিকে মণিপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসন রাজ্যে শান্তি ফেরাতে কোনো ভাবেই তৎপর নয়। এই অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙচুর চালায় মণিপুরের পূর্ত দফতরের মন্ত্রী কোনথোউজাম গোবিনদাসের বিষ্ণুপুর জেলার বাড়িতে ।
বিষ্ণুপুর জেলার নিংথোউকং এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্যান্য় সম্প্রদায়ের ‘সন্ত্রাসবাদীদের’ থেকে সরকার তাঁদের রক্ষা করতে কোনও পদক্ষেপ করছে না। তাই ক্ষোভের বশে বিজেপি নেতা তথা মণিপুরের মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালায় তাঁরা। তবে এই ভাঙচুরের সময় মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। তবে বাড়ির দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ও কিছু ইলেকট্রনিক গেজেট এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই মণিপুরের কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। কার্ফু জারি হয়। বন্ধ হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। সেনা, আধা সেনা,অসম রাইফেলসের বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ওই হিংসায় প্রায় ৭০ জনের প্রাণ গিয়েছিল বলে জানা যায়। আর এই অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর বাড়়িতে হামলা হল।
মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনায় এক আধিকারিক জানান, “স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, গোবিন্দ এবং অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা চলমান সহিংসতা নিয়ে নীরব রয়েছেন এবং সশস্ত্র জঙ্গিদের হাত থেকে তাঁদের রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।” এদিকে জানা গিয়েছে, ইস্টার্ন আর্মির কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর পি কালিতা বুধবার পর্যন্ত হিংসায় জর্জরিত মণিপুরে তিন দিনের সফরে গিয়েছেন। সেখানে তিনি সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। এই উত্তর-পূর্বে এখনও সেনা ও আধা সেনা মোতায়েন রয়েছে। মণিপুরে যাতে অশান্তি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর রয়েছে তাঁদের।