দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত ফাইল সই করল কেন্দ্র

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : তিন বছরের চরম বঞ্চনা, রাজনৈতিক টানাপোড়েন, লাগাতার আন্দোলন, হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। অবশেষে নতি স্বীকার করল কেন্দ্র। দীর্ঘ টালবাহানা শেষে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজ শুরুর ফাইলে সই করলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। কলকাতা হাইকোর্ট গত ১৮ জুন নির্দেশ দিয়েছিল, ১ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গে মনরেগার কাজ শুরু করতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল মোদি সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও গত ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। রীতিমতো ধমক দিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চের মন্তব্য ছিল, ‘মামলা কি প্রত্যাহার করবেন, নাকি খারিজ করে দেব?’ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কিছু বলার আগেই মাত্র ৬০ সেকেন্ডে মামলা খারিজ হয়ে যায়। তারপর হাইকোর্টও ফের জানিয়ে দেয়, ১০০ দিনের কাজ আটকে রাখার অধিকার কেন্দ্রের নেই। তারপরই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সেখান থেকে সম্প্রতি সবুজ সংকেত এসেছে বলেই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে খবর। সেই মতো মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ফাইলে সই করেছেন। তবে সেসব জেলায় কাজ এবং মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে গরমিল রয়েছে, সেখানে যেমন তদন্ত হচ্ছে, তা চলবে। রাজ্যের থেকে চাওয়া হবে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট। বাকি জায়গায় ফের কাজ শুরু হবে। অন্তত এদিন প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে মন্ত্রী সেটাই স্পষ্ট করেছেন।

আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে ১০০ দিনের কাজে টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র। কাজও বন্ধ। গরমিলে জড়িতদের শাস্তি দিক, কিন্তু বাকিদের কাজের সুযোগ যেন কেড়ে নেওয়া না হয়—সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারকে এমনই আর্জি জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি বারবার চিঠি দিয়েছেন। তারপরও কেন্দ্রের মরিয়া চেষ্টা ছিল, বাংলায় ১০০ দিনের কাজ যেন শুরু না হয়। তার জন্য আইন-আদালত করতেও পিছপা হয়নি মোদি সরকার। যদিও শত চেষ্টা সত্ত্বেও ব্যাকফুটে যেতেই হল। দিল্লির দরবার বলছে, এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। কাজ বন্ধ রেখে দিলে, বঞ্চনাকে হাতিয়ার করে শীতকালীন অধিবেশনেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চরমে নিয়ে যেত তৃণমূল কংগ্রেস। আর ভোটের প্রচারে বিজেপিরও প্রান্তিক মানুষদের মুখোমুখি হওয়ার উপায় থাকত না। এখন উলটে তারা আম জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, বিজেপির জন্যই ফের চালু হল ১০০ দিনের কাজ। কিন্তু বাংলার মানুষ কী ভাববে? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *