বিধাননগরের এক বেআইনি আবাসনের জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার নির্দেশ বিচারপতি সিনহার
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ফের কড়া নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। এবার বিধাননগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক বেআইনি আবাসনে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সেখানকার বাসিন্দাদের আবাসন খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিধাননগর পুরনিগমকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবাসন খালির সময়সীমা পূরণের পর ওই বাড়ি ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য।
একইসঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহা এও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই বিতর্কিত আবাসনের দুই নির্মাতা বিধাননগর এলাকায় কোনও নির্মাণ করতে পারবেন না। আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে ওই দুই নির্মাতাকে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এক কোটি টাকা জমা দিতে হবে সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে। পাশাপাসি ওই দুই নির্মাতার সম্পত্তির খতিয়ানও হলফনামা আকারে আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি সিনহার নির্দেশ, আদালতের থেকে আগাম অনুমতি ছাড়া ওই দুই নির্মাতা কোনও সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন না। আগামী ১৬ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিধাননগরের ওই বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতি সিনহা নির্মাতাদের ভূমিকা নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ হন। জানতে চান, ওই আবাসনের নির্মাতা কোথায়? তাঁকে এখনই পুলিশি হেফাজতে পাঠাবেন, এমন মন্তব্যও করেন তিনি। বিচারপতি জানতে চান, কত তলা বাড়ি বানানো হয়েছে? সেই প্রশ্ন শুনে আইনজীবী জানান, পাঁচ তলা আবাসন। কিন্তু সেই আবাসন তৈরির জন্য পুরনিগমের থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না তা জানতে চান বিচারপতি। জবাবে আইনজীবী বলেন, আবাসন বানানোর আগে অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আইনজীবী আরও জানান, সেখানে ফ্ল্যাট বিক্রি করে ৫০ শতাংশ টাকা নির্মাতারা পেয়েছেন এবং সেই টাকাও নির্মাণকাজেই ব্যবহার করা হয়েছে। এ কথা শুনে বিচারপতি কড়া মন্তব্য করেন, ‘সেটা আপনার টাকা। আপনি যেখানে ইচ্ছা ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, নির্মাণ বৈধ না অবৈধ? নির্মাণ যদি অবৈধ হয়, তবে তাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতেই হবে।’
অন্যদিকে পুরনিগমের তরফে আইনজীবী জানান, বিধাননগরের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে সব মিলিয়ে ৩৩০টি সন্দেহজনক নির্মাণের খবর পেয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষ। এই তথ্যের ভিত্তিতেই নির্মাতাদের থেকে নথি চাওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে বেশিরভাগ নির্মাতাদের কাছেই কোনও বৈধ নথি নেই বলে দাবি পুরনিগমের আইনজীবীর। তিনি আরও জানান, ‘বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ পুরনিগমের তরফে দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক নির্মাণের নির্মাণকারীদের বক্তব্য প্রায় প্রতিদিন পুরনিগম শুনছে।’