বীরভূমের এই গ্রামে ভাসানের ‘কার্নিভাল’ হচ্ছে বিগত ২০০ বছর ধরে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গত কয়েক বছরে এ রাজ্যে পুজোর কার্নিভাল বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কলকাতার রেড রোডে শহরের সেরার সেরা পুজো নিয়ে এই কার্নিভাল হয়। গত বছর থেকে জেলায় জেলায়ও কার্নিভাল শুরু হয়েছে। তবে দুবরাজপুর ব্লকের কৃষ্ণনগর গ্রামে শতাব্দীপ্রাচীন এক ‘কার্নিভাল’-এর খোঁজ মিলেছে। যে কার্নিভালের সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাস।
বর্গি আক্রমণ থেকে বাঁচতে একসময় বাড়িতে বাড়িতে লাঠি রাখার রেওয়াজ তৈরি হয় বীরভূমের কৃষ্ণনগর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে। শতাব্দী প্রাচীন সেই রীতি ঘিরেই আজও কৃষ্ণনগর গ্রামে বিজয়া দশমীর পরদিন বসে ঐতিহ্যবাহী লাঠি মেলা। আর লাঠি মেলার সঙ্গেই জমে ওঠে নিরঞ্জন কার্নিভালও।
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মল হক বলেন, “আজ কার্নিভাল করছে রাজ্য। তবে আমাদের এখানে কিন্তু বহুদিন ধরেই তা হচ্ছে। প্রতি বছর ১০-১২টা গ্রামের ঠাকুর আসে আমাদের এই মেলাপ্রাঙ্গনে। মেলা পরিক্রমা করে তারপর নিরঞ্জনের পথে এগিয়ে যায়। আমাদের এই মেলা সম্প্রীতির মেলা। এখানে যে মেলা কমিটি আছে, সেখানে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন।”
কৃষ্ণনগর গ্রামে একদিনের এই সম্প্রীতির মেলাকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহ থাকে চরমে। বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের জন্য হাজির হয় কৃষ্ণনগর গ্রামে। লাহগ্রাম, যশপুর, পছিয়াড়া, কান্তোড়, সালুঞ্চি-সহ এলাকার ১০-১২টি দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য জমায়েত হয় কৃষ্ণনগর মেলা প্রাঙ্গণে। এই মেলায় মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। শতাব্দী প্রাচীন লাঠি মেলা বা সম্প্রীতির মেলা পরিচালনা করে যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত।
উপপ্রধান পরিমল সৌ বলেন, “কতদিনের পুরনো এই মেলা, তা নির্দিষ্ট করে কেউই বোধহয় বলতে পারব না। তবে বয়স্কদের মুখে শুনেছি আড়াইশো তিনশো বছরের পুরনো মেলা। একাদশীর দিন এই মেলা বসে। লাঠির মেলা হিসাবেই সকলে চেনে।” এই মেলায় থাকে হরেক রকমের দোকান। নাগরদোলা, বাচ্চাদের খেলনা, মনোহারি দোকান, মিষ্টির দোকান, নানাস্বাদের নাড়ুর দোকান বসে এদিন।