রাতে হাতির গতিবিধিতে বিশেষ নজরদারি, প্রথমবার থার্মাল ড্রোন ক্যামেরার ব্যবহার শুরু করলো মেদিনীপুর বনবিভাগ
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সাধারণ ড্রোন ক্যামেরার পাশাপাশি এবার রাতেও হাতির উপর নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে থার্মাল ড্রোন ক্যামেরা ৷ জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে আসা বা তার আশেপাশে থাকা হাতিদের উপর নজর রাখতে এই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন মেদিনীপুরের ডিএফও দীপক এম ৷ প্রথমবার হাতিদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে এই ইনফ্রা-রে প্রযুক্তির থার্মাল ক্যামেরা ওড়ানো হচ্ছে ড্রোনের সাহায্যে ৷ এতদিন বাঘ শুমারির জন্য ইনফ্রা-রে প্রযুক্তির ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্যবহার করত বন দফতর ৷ যা জীবজন্তুর শরীরের উষ্ণতাকে ডিটেক্ট করে তাকে চিহ্নিত করবে ৷ বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মূলত লোকালয়ে হাতির প্রবেশ এবং হাতির হামলায় প্রাণহানি, আহত হওয়ার ঘটনা ও শস্যের ক্ষয়ক্ষতি রুখতে থার্মাল ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে ৷

এদিকে মেদিনীপুরের ডিএফও দীপক এম বলেন, “আমরা এক সপ্তাহ হল নজরদারি শুরু করেছি ৷ জঙ্গলমহল এলাকায় হাতি ও মানুষের সংঘাত লেগেই থাকে ৷ অধিকাংশ সময় হাতি এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে যাওয়ার সময় মাঝখানে লোকালয় পড়ে যায় ৷ তখন লোকালয়ে ঢুকে হামলা করে হাতি ৷ ফসলের ক্ষতি হয় ৷ অনেক সময় মানুষের প্রাণহানি ঘটে ৷ ড্রোন ক্যামেরা আমরা আগেও ব্যবহার করেছি ৷ এই থার্মাল ড্রোন ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হচ্ছে রাতে ৷”
কারণ হিসেবে তিনি আরও বলেন, “দিনেরবেলা হাতি খুব একটা মুভমেন্ট করে না ৷ রাতে হাতি বেশি মুভমেন্ট করে ৷ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় লোকালয় পড়ে গেলে ফসলের ক্ষতি করে ৷ তো রাতে জঙ্গলে কোথায় হাতি আছে, তা আমরা খুব সহজে ডিটেক্ট করতে পারব ৷ সেই মতো হাতিকে লোকালয় থেকে দূরে রাখা ও জঙ্গলে ফেরানো সহজ হবে ৷” তবে, হাতি যাতে লোকালয় না-ঢোকে তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএফও ৷ তিনি বলেন, “হাতি যাতে জঙ্গলেই থাকে, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ৷ যে ওয়াটারবডি আছে, সেগুলিকে আমরা আরও বড় করছি ৷ হাতিদের খাবার হিসেবে বাঁশ বন তৈরি করছি ৷ হাতিদের খাবার হিসেবে বিশেষ ঘাস তৈরি করা হচ্ছে ৷”
বন দফতর সূত্রে খবর, চলতি বছরে মেদিনীপুর বনবিভাগের অধীন বিভিন্ন এলাকায় হাতির হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ এছাড়াও, হাতির হানায় জখম হয়েছেন আরও চার জন ৷ এর সঙ্গে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি তো রয়েছেই ৷ গত এক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই কয়েকশো হেক্টর জমির ধান হাতির হামলায় নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ প্রচুর মাটির বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে ৷ সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে হাতির হামলায় ৷ ফলে ইনফ্রা-রে প্রযুক্তির থার্মাল ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি চালালে রাতে হাতির গতিবিধির লক্ষ্য করে এই ক্ষয়ক্ষতি রোখা সম্ভব হবে ৷

