সকালে পাঁক থেকে উদ্ধার জেঠিমার দেহ, সন্ধ্যায় কলেজ ছাত্রীর,ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল বিষ্ণুপুরে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কাশীপুরে চার বছরের শিশুকে গলা টিপে খুন করে পাঁকে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেঠিমার বিরুদ্ধে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে পুকুর থেকে উদ্ধার হল জোড়া দেহ। এক যুবতী ও তাঁর জেঠিমার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। নেপথ্যে উঠে এল যুবতীর প্রাক্তন প্রেমিকার নাম। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিষ্ণুপুরের হাটখোলা নুর্সিরদার চক গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবতীর নাম চুমকি নস্কর (১৯) ও তাঁর জেঠিমার নাম পূর্ণিমা নস্কর (৫৪)।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে হঠাৎ নিখোঁজ ছিলেন পূর্ণিমা। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বছর উনিশের চুমকিকেও। পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করতে থাকেন। এলাকার সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ করা হয়। তারপর খবর দেওয়া হয় থানায়। সামনেই ছিল পুকুরে। স্বাভাবিকভাবে সেখানেই চলে প্রথম তল্লাশি। পুকুর থেকে উদ্ধার হয় পূর্ণিমার দেহ। কিন্তু তখনও খোঁজ মিলছিল না চুমকির। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে তল্লাশি। সন্ধ্যায় সেই পুকুর থেকেই উদ্ধার হয় চুমকির দেহ। দীর্ঘক্ষণ জলে থাকায় তা ফুলে উঠেছিল। পরিবারের সদস্যরা দু’জনের দেহ শনাক্ত করেন। কিন্তু সম্পর্কে জেডেঠিমা ও ভাসুরঝির দেহ একসঙ্গে উদ্ধারের নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে, ভাবাচ্ছিল পুলিশকে। পরিবারের সদস্যদের দিকেই ছিল প্রথম সন্দেহের তির। পারিবারিক কোনও বিবাদ কি এর পিছনে থাকতে পারে, খোঁজ করতে থাকেন তদন্তকারীরা।তখনও পর্যন্ত জোড়া খুনের অন্য দিকটা পুলিশের হাতে আসেনি। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে, মাথায় আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে চুমকির। পূর্ণিমার মাথাতেও ছিল আঘাতের চিহ্ন। অর্থাৎ একই পদ্ধতিতে খুন হয়েছেন দু’জন।
পরিবারের তরফ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের মধ্যেই পুলিশ জানতে পারে, পাশের পাড়ার সৌরভ মণ্ডল নামে এক যুবকের সঙ্গে ভালবাসা ছিল চুমকির। দীর্ঘদিনের প্রেম। কিন্তু সম্প্রতি চুমকির পরিবারের তরফ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হওয়ায় যুবক বেঁকে বসেন। বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিলেন তিনি। তারপর চুমকিও সেই সম্পর্ক থেকে সরে আসেন। সম্প্রতি অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় চুমকির।
এরপর পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে সৌরভের ওপরেই। ঘটনার পর থেকে সৌরভের এলাকা থেকে গায়েব থাকায় সেই সন্দেহ আরও তীব্র হয়। পুলিশ মনে করছে, বৃহস্পতিবার রাতে চুমকিকে কোনও ভাবে ডাকেন সৌরভ। বাড়ির বাইরে আসতেই তাঁকে খুন করেন তিনি। কিন্তু সেই সময়েই বাড়ির বাইরে কোনও কাজে বেরিয়েছিলেন তাঁর জেঠিমা পূর্ণিমা। তিনি গোটা ঘটনা দেখে ফেলায় প্রমাণ লোপাট করতে সৌরভ তাঁকেও একই ভাবে খুন করেন বলে অভিযোগ।