আধার যাচাইয়ের কাজ জোর ঢিমেতালে, গ্যাস বন্ধের হুমকিতে চরম ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : রান্নার গ্যাস গ্রাহকদের আধার যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। যেসব গ্রাহক পহল এবং উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় ভরতুকি পান, তাঁদের আধার যাচাই করতেই হবে। উজ্জ্বলা যোজনায় সেই কাজ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করতে হবে। তা না হলে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ থেকে ভরতুকি পেতে সমস্যায় পড়বেন গ্রাহক। তবে যাঁরা পহল-এর আওতায় নামমাত্র ভর্তুকি পান (দেশের সিংহভাগ গ্রাহক এই প্রকল্পের আওতায় পড়েন), তাঁদের আধার যাচাইকরণের কাজ শেষ করার জন্য সরকারিভাবে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটররা অবশ্য বলছেন, ‘চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করার জন্য চাপ বাড়ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি অলিখিতভাবে তেমনই নির্দেশ দিয়েছে।’ এতে প্রবল চাপে পড়েছেন ডিস্ট্রিবিউটররা। তাঁদের বক্তব্য, ‘গ্রাহকদের একাংশ এখনও আধার যাচাইকরণে তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। ফলে কাজে গতি কমেছে।’ তাই অনেক ক্ষেত্রেই আধার যাচাই না করলে গ্রাহকদের গ্যাস ডেলিভারি বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন তাঁরা। সে নিয়ে ডিস্ট্রিবিউটর এবং গ্রাহকদের মধ্যে বিবাদের পারদ চড়ছে।

এদিকে কেন্দ্রের তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা গ্যাস গ্রাহকদের আধার যাচাইকরণের কাজ এগিয়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ সব গ্রাহকের আধার যাচাইকরণে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে দেশ। যাঁরা নামমাত্র ভরতুকি পান, তাঁদের ক্ষেত্রে সেই হার আরও কম। ডিস্ট্রিবিউটরদের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তেল সংস্থাগুলিও এই কাজে উদাসীন। অথচ ডিস্ট্রিবিউটরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সেই কাজ করতে চাইছে তারা। ডিস্ট্রিবিউটরদের দাবি, তেল সংস্থাগুলির চাপে পড়ে তাঁরা গ্রাহকের গ্যাস ডেলিভারি বন্ধের হুমকি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তা নিয়ে নিত্য বচসা লেগেই থাকছে গ্রাহকদের সঙ্গে। আর ক্ষোভ জমছে গ্রাহকদের একটা বড় অংশের মধ্যে। কোন নিয়মের আওতায় তাঁদের ডেলিভারি বন্ধ করা হবে, তা জানতে চাইছেন তাঁরা। এর কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না ডিস্ট্রিবিউটররাও।
এদিকে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের দাবি, আধারের সঙ্গে গ্যাসের সংযুক্তি করেই বহু ভুয়ো গ্রাহকের সন্ধান মিলেছে। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ভুয়ো গ্রাহক চিহ্নিত করে, সেগুলির ভরতুকি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। শুধুমাত্র উজ্জ্বলা যোজনাতেই ৮ লক্ষ ৬৩ হাজার ভুয়ো গ্রাহকের সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে সিদ্ধান্ত হয়, উজ্জ্বলার যে গ্রাহকরা প্রথমবার সিলিন্ডার নেওয়ার পর আর দ্বিতীয়বারের জন্য তা কেনেননি, তাঁদের সংযাগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এই উদ্যোগে ২০ হাজারের বেশি সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে।

