গাঁ’য়ের জোরের সাক্ষী থাকলো বাংলা! জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত, ফের সবুজ ঝড় বাংলার গ্রামে গ্রামে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গ্রাম বাংলার ভোটে ফের সবুজ ঝড়। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের জয় জয়কার। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবারও পাহাড় প্রমাণ সাফল্য জোড়াফুলের। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ সবেতেই শাসকদলের প্রার্থীদের বাজিমাত। মঙ্গলবার তাঁর বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘মা-মাটি-মানুষকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। গ্রামবাংলায় পুনরায় বিকশিত জোড়াফুল। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপনাদের অভূতপূর্ব সমর্থন, অকুণ্ঠ ভালোবাসা এবং অপার আশীর্বাদে আমি তথা আমার গোটা তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার কৃতজ্ঞ। এই জয় আমার প্রণম্য গণদেবতার জয়। এই নির্বাচন আবারও প্রমাণ করল, বাংলার মানুষের হৃদয়ে তৃণমূল কংগ্রেসই আসীন।’
২টি পার্বত্য জেলা ছাড়া সবকটিতেই জয় পেয়েছে টিএমসি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে, মঙ্গলবারের ফলাফলে দেখা গেছে দার্জিলিং এবং কালিম্পং বাদে প্রতিটি জেলায় ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ত্রি-স্তরীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিরোধী দল বিজেপি, বাম-কংগ্রেস জোট তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দার্জিলিংয়ে ভোটের ফলাফলের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। পাহাড়ের দখল নিচ্ছে অনীত থাপার দল।
প্রাথমিকভাবে, কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম) জোট মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলায় ভাল করবে বলে আশা করা হয়েছিল। বিশেষ করে এই বছরের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা আসন থেকে কংগ্রেসে জেতে। যদিও প্রাথমিক প্রবণতায় দুই জেলাতেই বিরোধীদের চেয়ে এগিয়ে ছিল টিএমসি।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার দিন দেখা গিয়েছে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (ISF), তার শক্ত ঘাঁটি ভাঙড়ে ভাল ফল করেছে। ভাঙড়ে নিজের গ্রামেই হেরেছেন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা আরাবুল ইসলাম।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী ৩২৬২৯টি আসনে, এগিয়ে ১১৩৮টি আসনে। বিজেপি জয়ী ৮৯২৬ আসনে, এগিয়ে ২৮৪টি আসনে। সিপিএম জয়ী ২৭৩৩টি আসনে, এগিয়ে ১৭৩টি আসনে। এছাড়া জেলা পরিষদে এখনও পর্যন্ত ২০৮টি আসনে জয়ী তৃণমূল, তারা এগিয়ে ২৫৬ আসনে। এদিকে বিজেপি জয়ী ৪টি আসনে, এগিয়ে ৭টি আসনে। এছাড়া সিপিএম এগিয়ে পাঁচটি আসনে, কংগ্রেস এগিয়ে ৪টি আসনে।
ফলাফল প্রসঙ্গে আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী বলেছেন, “টিএমসি জানত যে সত্যিই যদি গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয় তবে তারা হেরে যাবে। তাই মনোনয়নের পর্ব থেকে শুরু হওয়ার পর তারা সীমাহীন সন্ত্রাস চালিয়েছে। যেখানেই বিরোধীরা পাল্টা লড়াই করতে পেরেছে, সেখানেই তারা ভাল ফল করেছে।”
৮ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৮০.৭১ শতাংশ ভোট ৬১ হাজারের বেশি বুথে ভোট পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ৷ ভোটের দিন রাজ্যে হিংসায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে সমর্থনের জন্য বাংলার জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, টিএমসি ভোট লুট করেছে। তিনি দাবি করেছেন যদি নির্বাচন “অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে” অনুষ্ঠিত হত, তাহলে শাসকদল ২০ হাজারের এর বেশি পঞ্চায়েত আসন জিতত না’।