মহুয়ামৈত্র ইস্যুতেকি দূরত্ব বাড়ল মমতা-আদানির ? জল্পনা ক্রমশ তুঙ্গে বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায়!
বেস্ট কলকাতা নিউজ : একবছর আগেও ছিল সখ্যতা। বাণিজ্য় সম্মেলনের মঞ্চে জ্বলজ্বল করছিল তাঁর উপস্থিতি। কিন্তু তার পর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। ধীরে ধীরে বেড়েছে দূরত্ব। আর তারই প্রমাণ মিলল মঙ্গলবার সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বললেন, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য নতুন করে দরপত্র তথা টেন্ডার জমা দিতে পারেন যে কেউ। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, গৌতম আদানির আদানি গোষ্ঠী আর এই প্রকল্পে নেই।
মঙ্গলবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘তাজপুরে সমুদ্রবন্দর হবে। আপনারা তাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে আদানি গোষ্ঠীর এই টেন্ডার পাওয়ার যে কথা ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারের তরফে, সেটা কি তাহলে বাতিল হয়ে গেল? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত আদানিকে কি তা হলে দূরত্বের বার্তা দিলেন মমতা?
এদিকে কিছুদিন আগেও এই আদানি গোষ্ঠীকে সংসদে প্রশ্ন করা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মহুয়ার বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ আনেন। এথিক্স কমিটি সেই অভিযোগের তদন্তের পর মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে। শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে এই বিষয়ে ফয়সালা হতে পারে। এর পর থেকেই আদানিদের সঙ্গে তিক্ততা বেড়েছে তৃণমূলের, বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য ,গত বছর রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেন, তাজপুর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বরাত পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। নির্মাণে খরচ হবে ২৫ হাজার কোটি টাকা। বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেছিলেন ফিরহাদ। সূত্রের খবর, এর মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে একটি চিঠি আসে রাজ্যের কাছে। তাতে বলা হয়, বন্দর নির্মাণে বিতর্কিত যেন কিছু না করা হয়। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মূলত ,এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে আদানিদের কাউকেই দেখা যায়নি মঞ্চে। যার থেকে আদানি-নবান্ন দূরত্বের জল্পনাতে সিলমোহর পড়ছে। আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট নিয়ে এবছর আদানিদের মুখ পোড়ে। জালিয়াতি করে শেয়ারের দাম ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। তা নিয়ে তোলপাড় হয় জাতীয় রাজনীতি। তার পর আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দামও পড়ে। গৌতম আদানি বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকায় পিছোতে থাকেন। এগিয়ে আসেন মুকেশ আম্বানি। আর এবার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যেই আদানিদের বাদ পড়ার কারণ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।