আর সইতে হবে না রোজ রোজ সূচের ব্যথা , এবার থেকে স্প্রে করেই নেওয়া যাবে ইনসুলিন

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : বছর শেষে সুখবর দিয়েছে রাশিয়া। তৈরি করেছে ক্যানসারে ভ্যাকসিন। আজ আরও একটা ভাল খবর স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। সূচ ফুটিয়ে, শরীরকে কষ্ট দিয়ে ইনসুলিন নেওয়ার দিন শেষ। ২০২৫-এর মাঝামাঝি ভারতের বাজারে আসছে ওরাল ইনসুলিন স্প্রে। মাউথ ফ্রেশনারের মতো মুখে স্প্রে করেই ডোজ নেওয়া যাবে। ২০১৫ সালে আমেরিকায় প্রথম ওরাল ইনসুলিন স্প্রে-র অনুমোদন দেয় ওদেশের ওষুধ নিয়ামক সংস্থা। নাম আফ্রেজা। এই মুহূর্তে অন্তত ১৪টি দেশ ওরাল ইনসুলিন স্প্রে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। দুনিয়ার কয়েক লক্ষ মানুষ তা ব্যবহারও করছেন। এবার ভারতেও ওরাল ইনসুলিন স্প্রে তৈরির অনুমতি পেয়েছে ওষুধ নির্মাতা সংস্থা সিপলা। সিপলার এমডি উমঙ্গ বোহরা বলছেন, যারা প্রতিদিন ইনসুলিন নিতে অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য বড় উপহার হতে চলেছে এই ওরাল স্প্রে।

দিনে তিন-চার বার দেহে সূচ ফুটিয়ে ইনসুলিন নেওয়াটা কষ্টকর। ঝক্কিও অনেক। অনেকেই সেজন্য ইনসুলিন নেওয়া শুরু করে মাঝপথে বন্ধ করে দেন। ইনসুলিন সংরক্ষণ করার ঝামেলাও কম নয়। ওরাল ইনসুলিনে এসব কিছুই থাকবে না। মাউথ ফ্রেশনারের মতো একে পকেটে নেওয়া যাবে। আর এর কার্যকারিতাও অনেক বেশি। ইন্ডিয়া ডায়াবেটিক ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ডক্টর দেবেন প্রহরাজ বলছেন, ওরাল ইনসুলিন নেওয়ার ১২ মিনিটের মাথায় এটি কাজ করা শুরু করবে। আড়াই থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। টাইপ ওয়ান ও টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি দারুণ কার্যকর হবে।

ওরাল ইনসুলিনের দাম বা এটি কী মাত্রায় নিতে হবে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সিপলা। আর একটা খবর আপনাদের দিতেই হচ্ছে। ভারতে কাজ শুরু করেছে দেশের প্রথম ডায়াবেটিক বায়োব্যাঙ্ক। চেন্নাইতে এই বায়োব্যাঙ্কে দেড় লক্ষ ডায়াবেটিক রোগীর রক্ত ও দেহকোষের নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। দেশে ক্যানসারের মতো একাধিক রোগের বায়োব্যাঙ্ক থাকলেও ডায়াবেটিক বায়োব্যাঙ্কের কনসেপ্টটা নতুন। এখানে ডায়াবেটিক রোগীদের দেহের নমুনা, রক্ত ও রক্তকোষ সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR- এর দাবি, আগামিদিনে ডায়াবেটিসের চিকিত্‍সায় পথ দেখাবে এই বায়োব্যাঙ্ক। কীভাবে? ডায়াবেটিস রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে তিনটি জিনিস বোঝার চেষ্টা হবে। এক, কেন ভারতে মহামারির মতো ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে? দুই, কোন বয়সের মানুষের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি? তিন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের সঙ্গে ডায়াবেটিসের কোনও সম্পর্ক আদৌ আছে কি না? থাকলে কতটুকু?

গবেষণায় কী উঠে আসছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর তা নিয়ে প্রচার চালাবে আইসিএমআর। এই মুহূর্তে ভারতই বলা যেতে পারে দুনিয়ার ডায়াবেটিক ক্যাপিট্যাল। গত অগস্টে সায়েন্স ম্যাগাজিন ল্যানসেনের রিপোর্টে বেশ কয়েকটা আশঙ্কাজনক তথ্য উঠে আসে। এখানে দাবি করা হয়, ভারতে জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আগামী ৫ বছরে আরও ১৩ কোটি ভারতীয়র ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। এটা নিঃসন্দেহে বড় বিপদের আভাস। তার থেকেও উদ্বেগজনক, আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ শিশু ও টিন-এজার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এবং এটা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে দেশের বড় শহরে ও নামী স্কুলগুলির পড়ুয়াদের শরীরে নিঃশব্দে বাসা বাঁধছে ডায়াবেটিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *