এযেন একরকম বিশ্বজয় বাঙালি শিল্পপতির ! টেক্কা চিনকেও! বিদেশে ঢালাও রফতানি রাজ্যে তৈরি যানের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বাংলার ই-রিক্সা এবার চলল ঘানায়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে টোটোর দাপাদাপিতে যখন জনসাধারণ নাজেহাল, সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে ঠিক তখনই একেবারে আফ্রিকায় টোটো! এযে উলোটপুরাণ। হুগলির সুগন্ধ্যায় দিল্লি রোডের ধারে ই-রিকশা কোম্পানি হুগলি মোটরস প্রাইভেট লিমিটেড। এঁরা যেমন ই-রিক্সা তৈরি করেন তেমনই গারভেজ ভ্যানও তৈরি করেন।
এই কোম্পানির কারখানা থেকেই গোটা ১২ টি ব্যাটারি চালিত ভ্যান যাচ্ছে সুদূর ঘানায়। এরমধ্যে কিছু গারভেজ ভ্যান আর কিছু ই-রিক্সা বা টোটো। রবিবার বিকেলে সুগন্ধ্যার কারখানায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গারভেজ ভ্যান আর কিছু ই-রিক্সা কন্টেনারে লোডিং করান ওই সংস্থার অন্যতম কর্ণধার গুড্ডু হালদার। তিনি জানান, ওই কন্টেনারে মোট ১২টি ব্যাটারি চালিত যানের পার্ট ভরা হচ্ছে। যা চলে যাবে কলকাতা ডকে।
এরপর জাহাজে সেই যন্ত্রাংশ মাস দেড়েকের মধ্যে পৌঁছে যাবে ঘানার রাজধানী আক্রার কাছে মাদিনা শহরে। সেখানকার গোল্ডেন কোম্পানি লিমিটেড থেকেই এই বরাত এসেছে। সরকারি সমস্ত আইনকানুন মেনে যথোপযুক্ত কর প্রদান করেই ক্ষুদ্র থেকে মহীরুহতে পরিণত হয়েছে নিখাদ বাঙালি পরিচালিত এই কারখানা। আর গ্লোবাল মার্কেটিংয়ের যুগে আন্তর্জাতিক বাজার থেকেই বরাত মিলে গেছে তাঁদের। আর পুজোর মুখে এই ধরণের একটা বরাত পাওয়া মানে লটারি পাওয়া বলেই মনে করেন ওই কারখানার কর্ণধাররা।
হুগলি মোটরসের অপর কর্ণধার শেখ নাসিরউদ্দিন বলেন, “আমরা আপ্লুত, আমরা গর্বিত। আমাদের কারখানা বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাটারি চালিত ভ্যান তৈরি করছি। বর্তমানে সারা দেশ জুড়ে আমাদের ই রিকশার ডিলাররা ছড়িয়ে আছেন। মাসে হাজারের ওপর আমাদের গাড়ি বিক্রি হয়। এর আগে আমাদের গাড়ি নেপালেও গেছে। তবে এশিয়ার বাইরে এই প্রথম আমরা গাড়ি পাঠাচ্ছি। মাস খানেক আগে ঘানার প্রতিনিধিরা আমাদের কারখানা ঘুরে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রায় শ’খানেক অর্ডার দিলেও প্রাথমিকভাবে ব্যাটারি ছাড়া ১২টি গাড়ি পার্ট-পার্ট করে করে পাঠাচ্ছি। ঘানায় পৌঁছলে তাঁরা জুড়ে নেবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভিডিও মারফত জানিয়ে দিয়েছি কীভাবে অ্যাসেম্বল করা যায়। তারপরেও সমস্যা হলে আমাদের এখান থেকে মেকানিক পাঠাবো। ঘানায় আগেও ই-রিক্সা ছিল। তারা চিন থেকে আনাতো। কিন্তু বর্তমানে সেই দেশ থেকে কোনও কারণে না নিয়ে ভারত থেকে নিচ্ছে। একজন ভারতবাসী হিসেবে এটা ভাবতেই আমার গর্ব হচ্ছে যে আমরা চিনকে টেক্কা দিতে পেরেছি।” সোমবার সকালেই কলকাতার খিদিরপুর ডক থেকে জাহাজে এই গারভেজ ভ্যান ও ই-রিকশার কন্টেনার রওনা ঘানার উদ্দেশে।