কলকাতার এক পরিযায়ী শ্রমিককে তারই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফাঁসিতে লটকে দিল বউয়ের ‘অশ্লীল’ নাচে বাধা দিতেই!
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ছয় বছর কেটে গিয়েছিল বিয়ের পর। এমনকি তাদের এক পাঁচ বছরের ছেলেও রয়েছে। কিন্তু, চরম বাধ সাধল স্ত্রীয়ের ইনস্টাগ্রাম রিলস তৈরির নেশা। আর তার জেরেই কলকাতার এক পরিযায়ী শ্রমিকের মর্মান্তিক পরিণতি হল । তাঁকে ফাঁসিতে লটকে মেরে ফেলার মতো অভিযোগ উঠেছে তাঁরই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ব্যাপক চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের বেগুসরাই জেলার ফাফাউত গ্রামে।
জানা গেছে ২৫ বছর বয়সী মহেশ্বর কুমার রাই দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন কলকাতায়। সম্প্রতি তিনি ফিরেছিলেন বেগুসরাইয়ের গ্রামের বাড়িতে। ছয় বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল রানী কুমারীর সঙ্গে। বাড়ি ফিরে ভেবেছিলেন বেশি বেশি করে সময় কাটাতে পারবেন স্ত্রীয়ের সঙ্গে। কিন্তু, মহেশ্বরের সেই ইচ্ছেয় প্রবল ভাবে বাধ সেধেছিল স্ত্রীয়েরএই ভয়ঙ্কর নেশা। বাড়ি ফিরে মহেশ্বর দেখেছিলেন, স্ত্রী বিভিন্ন ভাইরাল গানের সঙ্গে নেচে তার রিলস ভিডিয়ো তৈরি করেন। এমনকি সারাদিন এই নিয়েই মেতে আছেন। স্ত্রীয়ের সেই নাচ, চরম অশ্লীল বলে মনে হয়েছিল মহেশ্বরের। এমনকি আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে কথা কাটাকাটিও হয়েছিল।
এদিকে রবিবার (৭ জানুিয়ারি), গভীর রাতে মহেশ্বর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তারপর থেকেই। তাঁর ভাই রুদাল তাঁকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর দাদার বদলে ফোন তুলেছিলেন অপর এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে ওই ব্যক্তির কথা কাটাকাটিও হয়। এরপর, নিজেদের বাড়িতে ফোন করে রুদাল জানান মহেশ্বরের কোনো খোঁজ নেই বলে । সেই খবর পেয়ে, মহেশ্বরের পরিবারের লোকজন রাতেই তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছন।
আবার তাঁর বাবা এও জানিয়েছেন, তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেছিলেন মহেশ্বর রাই মরে পড়ে রয়েছেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির কেউ বাড়িতে নেই। মহেশ্বরের বাবা অভিযোগ করেছেন স্ত্রীকে রিলস তৈরিতে বাধা দেওয়াতেই, তাঁর শ্বশুরবাড়়ির লোকজন মহেশ্বরকে ফাঁসিতে লটকে হত্যা করেছে বলে । তাঁর আরও দাবি, ঘটনাস্থলে চার ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অজুহাতে তারা মহেশ্বরের লাশ গায়েব করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু, ওই চারজন পালিয়ে যায় তাঁদের আসতে দেখে।
আর এরপর মহেশ্বরের বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। মহেশ্বরের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু, রানী কুমারী বা তাঁর বাড়ির কারও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের খোঁজে, রানীর আত্মীয়স্বজনদের বাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে।