কিশোর-কিশোরীরা ক্রমশ টার্গেট পর্নোগ্রাফিই ‘ফাঁদে’, অভিভাবকেরা কতটা চিন্তায়? উঠছে প্রশ্ন
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গতিময় জীবনে বর্তমানে ইন্টারনেট ছাড়া যেন জীবন একরকম অচল। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কেনাকাটা থেকে গেম, শেয়ার বাজার, এমনকী এখন পড়াশোনার জন্যও ইন্টারনেটের উপর নির্ভরতা ক্রমাগত যেন বেড়েই চলেছে আট থেকে আশি সকলের। বাবা-মায়েদের ফোনে এখন অবাধ বিচরণ কিশোর-কিশোরীদের। অনেকের হাতে তো ক্লাস টেনের গণ্ডি পার করলেই এসে যাচ্ছে একেবারে নিজস্ব ফোন। আর তাতেই বাড়ছে চরম বিপদ। ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোর-কিশোরীদের ক্রমাগত ফাঁদে ফেলছে সাইবার প্রতারকেরা। পর্নোগ্রাফি দেখিয়ে চাওয়া হচ্ছে এমনকি টাকা। অজান্তেই কেউ ঢুঁ মেরে ফেলছেন ডার্ক ওয়েবের দুনিয়ায়। বাড়ছে অবসাদ। লাঠে উঠছে পড়াশোনা। লোক লজ্জার ভয়ে অনেকে আবার এগিয়ে যাচ্ছেন আত্মহত্যার পথেও। চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে অভিভাবকদের। সূত্রের খবর, মামলা রুজু হওয়ার ঘটনায় ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশই অনলাইন অপরাধের শিকার। মামলা গুলি খতিয়ে দেখলে দেখা যাচ্ছে ১৪.৯ শতাংশ সাইবার বুলিংয়ের শিকার। আবার ১৩.৬ শতাংশ শিশু থেকে কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। কিন্তু, নিস্তার কোথায়? কী ভাবছেন বাংলার অভিভাবকেরা?
শিলিগুড়ির বাসিন্দা মাম্পি দাস। রাজ্য তথা দেশ থেকে লাগাতার শিশুদের টার্গেট করে সাইবার ক্রাইমের ঘটনায় বেশ চিন্তিত তিনিও। বলছেন, “বিষয়টা তো খুবই চিন্তার। শেষ তিন চার বছরে বাচ্চারা অনেক বেশি ইন্টারনেটের উপর নির্ভর হয়ে গিয়েছে। ওরা তো ওতো ঠিক ভুল জানে না। ওরা ওদের প্রয়োজন মতো কাজ করতে যাচ্ছে। কিন্তু, সমস্যাটা হচ্ছে ইন্টারনেটে এমন সব জিনিস প্রোমোট করা হচ্ছে যেগুলিতে ক্রমশ ওদের নজর চলে যাচ্ছে। সেগুলি মনিটর করা কোনো ভাবে যাচ্ছে না। অজানা অনেক জিনিস যখন ওদের সামনে আসছে সেগুলিতে ওরা কৌতূহলবশত ঢুকে যাচ্ছে।” শহরের আরও এক অভিভাবক বলেন , “যারা এই ধরনের অপরাধ করছে তারা কিন্তু সাধারণ কোনো অপরাধী নয়। ওরা সব ভাল প্রোগ্রামার। চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েই ওরা এই অপরাধগুলি করছে। এর কিন্তু কোনও প্রেসক্রিপশন নেই। তাই সচেতন থাকতে হবে আরও।”
শহর কলকাতার সাইবার বিশেষজ্ঞরা আরোও বলছেন, অজান্তে নানা লিঙ্কে ক্লিক করার ফলে কম্পিউটার, মোবাইলে বাসা বাঁধছে নিত্যনতুন ম্যালওয়্যার, হ্যাকিং টুলস। ফলে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও সেগুলি নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছে অজান্তে। মাঝেমধ্য়েই স্ক্রিনে ভেসে উঠছে বার্তা। দেখা যাচ্ছে ‘ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল’-এর লোগো-সহ লেখা। তাতেই বলা হচ্ছে, দেশে নিষিদ্ধ বেশ কিছু পর্নোগ্রাফি সাইট বার বার খোলার জন্য এই কম্পিউটারটি ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। চাওয়া হচ্ছে এমনকি মোটা টাকার জরিমানাও । দ্রুত টাকা না দিলে বাড়িতে যেতে পারে পুলিশ। এছাড়াও হুমকি দেওয়া হচ্ছে আইন মন্ত্রকে রিপোর্ট করারও। আর এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অভিভাবকেরা।