ক্রমাগত দুধ পড়ত গরুর বাঁট থেকে, আস্ত এক শিবলিঙ্গ উঠে এসেছিলো মাটি খুঁড়তেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ‘গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটা উঁচু ঢিপি। আর সেখানেই প্রত্যহ গিয়ে দাঁড়াত কয়েকটা গরু। তাদের বাঁট থেকে মাটির ঢিপির উপর ঝরে পড়ে দুধ। অলৌকিক এই ঘটনাই একসময় সাড়া ফেলে দিয়েছিল এলাকায়। রাজা কালুমুরারি নির্দেশে অধুনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর জঙ্গল কেটে সাফ করা হয়। যে এলাকায় গরুদের এই কাণ্ডকারখানার কথা শোনা যেত রাজা দাঁড়িয়ে থেকে সেই এলাকা খনন করেন। উদ্ধার হয় শিবলিঙ্গ। পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের পঁচেটগড়ে রয়েছে রাজবাড়ি। এই এলাকার নাম পঁচেটেগড় হওয়ার পিছনের কারণও কিন্তু বেশ চমকপ্রদ।
দেশের শাসন ক্ষমতায় তখন মোঘলরা। মসনদে জাহাঙ্গির। এই কালুমুরারিকেই বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। এই কাজ আরও ভাল করে সামলাতে শুরুতে পটাশপুর এলাকার খাঁড় কল্যাণপুরে বসবাস করতেন কালুমুরারি। তখনই রাজকর্মচারীদের থেকে জানতে পেরেছিলেন ওই রহস্যজনক টিপির কথা।
শোনা যায়, যে সময় ঢিপি খোঁড়া হচ্ছিল সেই সময় শিবলিঙ্গটি উদ্ধারের সময় তাতে আঘাত লাগে। ভেঙেও যায়। চিন্তায় পড়ে যান রাজা কালুমুরারি দাস মহাপাত্র। রাজপুরোহিতের নির্দেশে বেনারস থেকে আনা হয় আরও চারটি শিবলিঙ্গ। বসানো হয় আগের শিবলিঙ্গের চারপাশে। ওই শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধীরে ধীরে পঞ্চেশ্বর নামটি প্রচার হতে থাকে এলাকায়। সেই পঞ্চেশ্বর থেকেই আজ পঁচেট গ্রামের নাম। এখানেই রাজা তৈরি করেন তাঁর পঁচেটগড় রাজবাড়ি। পরবর্তীতে রাজবাড়ির রাজারা সকলেই শিবের পুজোয় ব্রতী হন। সকলেই হয়ে যান শৈব। বর্তমান রাজ পুরোহিত পূর্ণেন্দু শেখর পন্ডা বলছেন, “একসময় এখানে জঙ্গল ছিল। গরুতে দুধ দিত। তখনই ওই টিবির কাছের এলাকা খনন করে দেখা যায় এখানে ঠাকুর রয়েছে।” বর্তমানে পঁচেট গড় রাজবাড়ির এই শিব মন্দিরকে কেন্দ্র করে মানুষের উৎসাহ, ভক্তির অন্ত নেই।