খারাপ লোক বিদ্বান হলেও দূরে থাকা উচিত তাঁর থেকে, এমনটাই বলে গিয়েছেন কৌটিল্য চাণক্য
বেস্ট কলকাতা নিউজ : জগতে বিদ্বান ব্যক্তির সমাদর করে থাকে মূলত সব মানুষই। কিন্তু, তারপরও বিস্তর ফারাক থেকে যায় দুর্জন আর সুজন ব্যক্তির মধ্যে। বহু মানুষ আছেন, যাঁরা স্বভাবেই দুর্জন। এই সব দুর্জনরা পাণ্ডিত্য অর্জন করলেও কখনও তাঁদের স্বভাব কিন্তু বদলায় না। পণ্ডিতরা বলেন, মূর্খ দুর্জন ব্যক্তির চেয়ে শিক্ষিত দুর্জন ব্যক্তি আরও ক্ষতিকর। কারণ, দুর্জন ব্যক্তি মূর্খ হলে তার অভিপ্রায় বোঝা যায়। কিন্তু, সেই দুর্জন ব্যক্তি যদি শিক্ষিত হয়, তবে কঠিন হয়ে যায় তার অভিপ্রায় বা ইচ্ছা বোঝাটা। কারণ, সে নিজের অভিপ্রায় কাউকে বুঝতে দেয় না ছল-চাতুরি করে।
এই সব লোকজন কখন যে কীভাবে অন্যের ক্ষতি করে, তা সহজে বোঝা যায় না। আর, তাই মহামতি চাণক্য বলে গিয়েছেন, পণ্ডিত হলেই কোনও ব্যক্তি সুজন হয়ে গেলেন, ভালো মানুষ হয়ে গেলেন, এমন কোনও কথা নেই। পাণ্ডিত্য কখনও বদলাতে পারে না মানুষের স্বভাবকে । তাই সবসময়ই ঠিক বা উচিত বিদ্বান দুর্জনদের সংশ্রব এড়িয়ে চলাটাই । এই ব্যাপারে চাণক্য তাঁর নীতিশাস্ত্রে বলেছেন, ‘দুর্জনঃ পরিহর্তব্যো বিদ্যয়ালঃ কৃতোহপি সন্। মণিনা ভূষিতঃ সর্পঃ কিমসৌ ন ভয়ংকরঃ।।’ যার বাংলা তর্জমা করলে হয় যে বিদ্যায় ভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করা উচিত। কারণ, মণিভূষিত হলেও সাপ কিন্তু চিরকালই ভয়ঙ্করই থাকে।
চাণক্য এই ব্যাপারে সেই সব বিষধর সাপের কথা উল্লেখ করেছেন, যাদের মাথায় মণি আছে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। এই মণি অত্যন্ত লোভনীয় জিনিস। তা থাকে সাপের মাথায়। এমনটা বিশ্বাস অনেকেরই। তাঁরা মনে করেন, মণি সাপের মাথার শোভা বর্ধন করে। কিন্তু, সেই মণি দেখে আকৃষ্ট হয়ে সাপের সামনে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ না-বলেই পরামর্শ দিয়েছেন চাণক্য। তিনি নিজের নীতিশাস্ত্রে বোঝাতে চেয়েছেন যে, মণি সাপের শোভা বাড়ালেও তাকে বিষমুক্ত করে না। ফলে মণি নিতে গিয়ে সাপের বিষে মৃত্যু হওয়া কোনও কাজের কথা নয়। সেই কারণেই মণিযুক্ত বিষধর সাপের মতই দুর্জন পণ্ডিত ব্যক্তিকেও বুদ্ধিমানের পরিত্যাগ করাই উচিত।