তৃণমূলের বড় চমক এবারের লোকসভা ভোটে, অনিল কন্যা অজন্তা কি প্রার্থী হতে পারেন যাদবপুর কেন্দ্রে ? ভোটের মুখে শুরু জোর জল্পনা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস এবার তৃণমূলের প্রার্থী? ভোটের মুখে শুরু জোর জল্পনা। তৃণমূল শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে হাইপ্রোফাইল লোকসভা কেন্দ্র যাদবপুরে প্রার্থী হতে চলেছেন অজন্তা বিশ্বাস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সিপিএমের বৈরিতা যখন তুঙ্গে, সেই সময় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন প্রয়াত নেতা অনিল বিশ্বাস। তবে বছর কয়েক আগে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় সেই অনিল-কন্যার একটি উত্তর সম্পাদকীয় ঝড় তুলেছিল। নারীশক্তি নিয়ে সেই লেখায় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম উঠে এসেছিল অধ্যাপিকা অজন্তার কলমে। এবার লোকসভা ভোটের মুখে তাঁকে নিয়েই তুমুল জল্পনা। শোনা যাচ্ছে, অধুনা বাম অধ্যুষিত যাদবপুরে নাকি তৃণমূলের তুরুপের তাস হতে চলেছেন অনিল-তনয়া।
সূত্রের দাবি, অজন্তা বিশ্বাসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সুগত বসুর নাম নিয়েও চর্চা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সুগত বসুকে ছাপিয়ে গিয়েছে অজন্তার নাম। গত বছর এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। কিন্তু এবার তিনি প্রকাশ্যে রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন, সাংসদ পদে ইস্তফা দিতে বিধানসভায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। এবার যদিও তৃণমূলের তরফে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়নি। দফায় দফায় চলছে তালিকা চূড়ান্ত করার বৈঠক। এরই মধ্যে অজন্তার নাম ভাসছে যাদবপুরের বাতাসে।
উল্লেখ্য ,পেশায় ইতিহাসের অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাস বছর কয়েক আগে চরম বিতর্কের মুখে পড়েন। ২০২১ সালে তৃণমূলের মুখপত্রে ‘নারী আন্দোলন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’ শীর্ষক একটি কলাম লিখেছিলেন তিনি। তবে অনিল বিশ্বাসের কন্যার ‘মমতা বন্দনা’ ভাল চোখে দেখেননি বাম সমর্থকরা। যদিও ইতিহাস ও নারী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অজন্তার প্রবন্ধ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।
এরপর তৃণমূলের সঙ্গে অজন্তা বিশ্বাসকে জড়িয়ে আর কোনও আলোচনা সামনে আসেনি। বহুদিন পর লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে জল্পনা ছড়াচ্ছে। তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, তা নেবেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যাদবপুর কেন্দ্রে এখনও বহু বাম সমর্থক আছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। এর আগেও কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে ক্ষিতি গোস্বামীর কন্যাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। এক্ষেত্রে বামেদের কিংবদন্তি নেতা অনিল বিশ্বাসের মেয়েকে প্রার্থী করলে কি বামেদের কিছু ভোট তৃণমূলে আসতে পারে? অন্তত যে বাম সমর্থকদের ভোট বিজেপির ঝুলিতে যায় বলে মনে করা হয়, সেটা তৃণমূলের দিকে আসতে পারে, এমনটাই আশা ঘাসফুল শিবিরের একাংশের।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালেই সিপিএমের সঙ্গে অজন্তার সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে ছিন্ন হয়েছে। সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করাননি তিনি। জাগো বাংলায় কলম ধরার পরই অজন্তাকে শোকজ করা হয়েছিল সিপিএমের তরফে। জবাবও দেন অনিল-কন্যা। কিন্তু, তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি দল। সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল।