দাম একদম সাধ্যের মধ্যে, প্লাস্টিকের জায়গায় বাঁশের জলের বোতলের চাহিদা কেন বাড়ছে ? জানেন কি তার কারণ ?

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্লাস্টিক বোতলের বদলে জল খান বাঁশের বোতলে বাঁশের তৈরি জলের বোতল? অবাক হচ্ছেন অনেকে। তামার জলের বোতল স্টিলের জলের বোতল এগুলি এখন ঘরে ঘরে। তবে সকলেই যখন ভেষজ জিনিসপত্র দেশীয় দ্রব্যের উপর নজর রাখছে তখন জলের বোতলেই নয় কেন? অভিনব এই জলের বোতলের চাহিদা এখন দিন দিন বেড়েই চলেছে। ডিজাইন অফ ফিনিশিং এর জন্য আলাদা মার্কসও পাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব, একটা বোতল টেকে ১৮ মাস। সব মিলিয়ে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি বাঁশে।

কথায় আছে, বাঁশ দিও না, বাঁশ নিও না। উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রধানত এই বর্ষজীবী গাছ বাঁশের জন্ম হয়। বাঁশ দিয়ে আসবাব, বাসনকোসন, বাক্সের মতো নিত্য ব্যবহার্য বহু জিনিসপত্র তৈরি হয়। বাঁশের তৈরি প্রতিটি জিনিসই আমাদের পরিবেশ সহায়ক। পরিবেশের মধ্যে কোনও রকম বিষক্রিয়া বাঁশের তৈরি জিনিস থেকে হবে না। বাঁশের এমন গুণের জন্যই তো তার আর এক নাম ‘সোনার বৃক্ষ’! বাঁশের এই প্রাকৃতিক গুণের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে ‘বাঁশের বোতল’। প্রকৃতিবান্ধব বলে প্লাস্টিক, কাচের বোতলের তুলনায় বাঁশের বোতলের গুরুত্ব আস্তে আস্তে বাড়ছে। বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতল যে শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর তাই না, মানবদেহের জন্যও ক্ষতিকর। প্লাস্টিক থেকে ‘বিসফেনল এ’ হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে ব্রেস্ট ক্যান্সার, হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে। গর্ভধারণের জন্যও ক্ষতিকর। প্লাস্টিকের ফ্যাথালেটস থেকে ক্যান্সার হতে পারে, থাইরয়েডের সমস্যা তৈরি করে। তাই প্লাস্টিকের বোতলের বিকল্প হতেই পারে বাঁশের বোতল।

বাজারের চাহিদার অনুপাতে বাঁশের বোতল তৈরির ক্ষেত্রে সুবিধা এই যে, বাঁশ গাছের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়, একদিনে প্রায় ৩৯ ইঞ্চি। বেশিরভাগ বাঁশের বোতল ‘ভালুকা’ নামের বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়। একটি বাঁশের বোতল তৈরি করতে প্রায় ৫-৬ঘণ্টা সময় লাগে। ভালুকা কাটা থেকে শুরু করে, তার পর সেটা ফুটিয়ে, শুকিয়ে তার পরে স্মোক করে বাঁশের বোতলের বিভিন্ন অংশ জোড়া হয় এবং সবশেষে বোতলের আকার তৈরি করে ভালোভাবে পালিশ করা হয়। ফোটানোর ধাপে এর উপাদান বিশুদ্ধ হয় এবং কমপক্ষে ১৮ মাস ব্যবহারের উপযোগী মজবুত হয়। বাঁশের বোতল থেকে জল পান করার শারীরিক সুবিধা এটাই যে, বাঁশ গাছে অ্যান্টিমাইক্রব থাকে যাকে ‘ব্যাম্বু কুন’ বলে। এই মাইক্রব আসলে বাঁশ গাছের প্রকৃতির জটিল পরিস্থিতিতে থেকে বাঁচার সহায়ক।

বাঁশের বোতল খুব সহজেই তাই ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক হয়। এ ছাড়াও বাঁশের মধ্যে বহু স্বাস্থ্যকর গুণ আছে। ক্যানসার প্রতিরোধ, বয়সবৃদ্ধিজনিত সমস্যা, দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করা, হজম শক্তি বৃদ্ধি, হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে বাঁশ। তাই বাঁশের বোতলে জলপান আমাদের একটা রক্ষাকবচও বটে। বাঁশের বোতলে সিলিকন বা রবার আবরণ থাকে। বাঁশ পিচ্ছিল হয়, তাই এগুলোর গায়ে আবরণ জরুরি। উপাদান ভালো মানের হতে হবে, কারণ প্রত্যেকে এই ভেবেই বাঁশের বোতল কেনেন, যাতে সেগুলিকে রিসাইকেল করা যায় ও পরিবেশের কোনও ক্ষতি না হয়। দামে হয়তো প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে সামান্য বেশি, কিন্তু জীবন তো আগে নাকি— তারপর তো টাকার সেভিংস! ভাবছেন কিভাবে পাবেন বাঁশের জলের বোতল। আপনার ফোন থেকে ই বিভিন্ন অনলাইন শপিং অ্যাপে পছন্দ করে কিনে ফেলুন বাঁশের জলের বোতল। দামও মধ্যবিত্তের হাতে নাগালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *