দ্রুত রোজগার শুরু হবে সামান্য কিছু লগ্নিতেই! এই বৃদ্ধের অসামান্য উদ্যোগ ক্রমশ পথ দেখাচ্ছে বেকারদের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারংবার শোনা গিয়েছে এই কারবারের কথা। চপ বিক্রি করে স্বনির্ভর হওয়ার কথা বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেও জেলা সফরে বেড়িয়ে বারবার রাস্তার ধারের চপের দোকানে ঢুঁ মেরেছেন। রাজ্যের কোনায়-কোনায় রাস্তার ধারে চপের দোকানের দেখা মেলে। বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে এই চপ। সুস্বাদু এই খাবারের অসামান্য কারবারেই এবার বেকারদের রোজগারের দিশা দেখাচ্ছেন এই বৃদ্ধ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ,স্বাদের জন্য এতল্লাটের চপ দশকের পর দশক ধরে যথেষ্ট সমাদর পেয়ে চলেছে। এমনিতেই বাঙালির একটা বড় অংশের চপ-প্রীতি নতুন নয়। যুগের পর যুগ ধরে বাঙালির চপ-প্রেম জায়গা করে নিয়েছে গদ্য-পদ্যেও । হালফিলের স্বাস্থ্য সচেতনতার যুগেও চপ ছাড়তে মন চায় না বাঙালির।
পাঁশকুড়ায় একগুচ্ছ চপের দোকান রয়েছে। তবে পাঁশকুড়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের গুমাই কালীমন্দির সামনে চপের দোকানটির জুড়ি নেই। স্থানীয় বাসিন্দা জগন্নাথ দণ্ডপাট পাঁশকুড়া-হলদিয়া রাজ্য সড়কের পাশে প্রতিদিন সন্ধে ৫টার পর থেকেই চপের দোকান খুলে বসেন। গত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে তিনি এই চপের দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে এই দোকান।
প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ পিস চপ ভাজা হয় দোকানে। গোটা পাঁশকুড়ায় জগন্নাথের চপ ‘সুপার-ডুপার’ হিট। তাঁর চপের স্বাদ গ্রহণ করেছেন নেতা-মন্ত্রী-সহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি আধিকারিকেরাও। এমনকী বাম আমলে রাইটার্সের পর মূলত এখন নবান্নেও ‘যাতায়াত’ রয়েছে তাঁর চপের।
তবে বর্তমানে বয়স বেড়েছে জগন্নাথের, তবে নিপুণতাও ততই বেড়েছে চপের উপকরণ-ভাগে। তাঁর কথায়, “বাড়ির পাশের এক ব্যক্তি রাইটার্স বিল্ডিয়ে চাকরি করেন। একবার আমার চপ উনি রাইটার্সে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই চপ যেত রাইটার্সে। বর্তমানে সেই ব্যক্তি নবান্নে কর্মরত। সেখানেও উনি মাঝেমধ্যে চপ নিয়ে যান।”
এমনকি পাঁশকুড়ার বহু চপ বিক্রেতাও তাঁর কাছে যান চপ তৈরির উপায় কিংবা কৌশল জানার জন্য। জগন্নাথ দণ্ডপাট প্রতিদিন মূলত গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ পিস চপ ভাজেন। এই জগন্নাথ দণ্ডপাটের হাতে তৈরি চপ খেয়েছেন এমনকি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে চপের দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তি কোনওদিন আপস করেননি চপের স্বাদ নিয়ে।
এমনিতেই পাঁশকুড়ার চপ বিশেষ ভাবে বিখ্যাত। নতুন প্রজন্ম কাটলেট, চিকেন তন্দুরি-সহ রকমারি পদের খাবারে মজে থাকলেও এখনো কমেনি চপের কোনো রকম কদর। শোনা যায়, ভারতে সর্বপ্রথম চপের আবিষ্কার হয় মেদিনীপুরের মাটিতেই। জনপ্রিয় খাদ্যটি প্রথম তৈরি হয় মূলত অবিভক্ত মেদিনীপুরের পাঁশকুড়াতেই। এমনকি এই চপের দোকানের সংখ্যাও নেহাতই কম নয় সারা বাংলা জুড়ে।