নয়া দিল্লি স্টেশনে দুর্ঘটনার নেপথ্যের কারণ প্রসঙ্গে এবার রেলের যুক্তিকেই খারিজ করল খোদ আরপিএফ!

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ফের খণ্ডন করা হল রেলের যুক্তি। নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনার নেপথ্যের কারণ জানিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিল আরপিএফ। সেখানে এই ভয়বাহ দুর্ঘটনার জন্য অব্যবস্থা ও প্রচণ্ড ভিড়কেই দায়ী করা হয়েছে। যদিও দুর্ঘটনার পর পরই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দাবি করেছিলেন যে, দিল্লি স্টেশনে কোনও অস্বাভাবিক ভিড় ছিল না। আরপিএফ-এর রিপোর্টে কী উল্লেখ রয়েছে? সূত্রের খবর আরপিএফ জানিয়েছে যে, প্রয়াগরাজগামী চারটি ট্রেন রাত ৮.১৫ থেকে রাত ১০.১০-এর মধ্যে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। চারটি ট্রেন ছাড়বে মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে। ফলে মহাকুম্ভগামী ভক্তদের বিশাল ভিড় প্ল্যাটফর্মে ছিল। গড়ে প্রতি ঘন্টায় স্টেশনে প্রায় ১,৫০০ সাধারণ টিকিট বিক্রি হয়েছিল এবং আরও অনেক টিকিট অনলাইনে কেনা হয়েছিল।

আরপিএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, নয়াদিল্লি এবং বারাণসীর মধ্যে চলাচলকারী প্রয়াগরাজ হয়ে যাওয়া শিব গঙ্গা এক্সপ্রেস রাত ৮.১৫ মিনিটে প্ল্যাটফর্ম নম্বর ১২ থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। মগধ এক্সপ্রেস রাত ৯ টায় প্রয়াগরাজ হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ইসলামপুরের উদ্দেশ্যে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে এবং প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস রাত ১০.১০ মিনিটে একই প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। শিব গঙ্গা এক্সপ্রেস যখন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়, তখন হাজার হাজার যাত্রী ভিড়ের কারণে ট্রেনে উঠতে পারেননি। এই যাত্রীরাই তখন জানতে পারেন যে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ ট্রেন ছেড়ে যাবে।

যার ফলে স্চেশনে উত্তেনা ছড়ায়। আরপিএফ-এর রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে য়ে, বিপুল সংখ্যক মানুষ ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য দুই এবং তিন নম্বর ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করে বিশেষ ট্রেনে ওঠার চেষ্টায় মরিয়া ছিলেন। এমনিতেই মগধ এক্সপ্রেসের জন্য ১৪ নম্ব প্ল্যাটফর্মে ভিড় ছিলই, তার উপর আরও ভিড় ১২ থেকে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে আসতে শুরু করে।এর ফলেই হুড়োহুড়ি ও পদপৃষ্টের ঘটনা ঘটেছে।

রিপোর্টে আরোও বলা হয়েছে যে, একসময় ভিড় এতটাই বাড়তে শুরু করে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল, তখনই আরপিএফ-এর সহকারী নিরাপত্তা কমিশনার- স্টেশন ম্যানেজারকে আর টিকিট না দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে হাজার হাজার মানুষ প্ল্যাটফর্ম এবং ফুটওভারব্রিজে হাজির হয়ে গিয়েছিল। সমস্ত কর্তব্যরত এবং অফ-ডিউটি ​​কর্মীদের প্ল্যাটফর্ম এবং ফুটওভারব্রিজে পৌঁছানোর জন্য ফোনও করা হয়েছিল এবং স্টেশন ডিরেক্টরকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রেনটি ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে বলা হয়েছিল। এদিকে আহত একজন মহিলার বিবৃতি অনুসারে, রাত ৯.১৫ টায় পদপিষ্টের ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট পরে, রাত ৯.৫৫- নাগাদ দমকলকে প্রথম ফোন করা হয়েছিল। এদিকে রেলওয়ে বোর্ডের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে স্টেশনে নিযুক্ত সমস্ত আধিকারিক এবং কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, এরপর কমিটি জোনাল রেলওয়েতে রিপোর্ট জমা দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *