পাল-পাল মৌমাছি মরছে এক অজানা রোগে , চরমে উদ্বেগ, বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা এমনকি মধু উৎপাদনেও !

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : একদিকে অজানা রোগের আক্রমণে মরছে মৌমাছির পাল। অন্যদিকে জমিতে সর্ষের ফুলে মধু ধরছে না। যার জেরে কৃত্রিমভাবে মধু উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছেন মৌমাছি পালকেরা। এই অবস্থায় পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অসংখ্য মধু চাষিরা লোকসানের আশঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন। এরই পাশাপাশি বাজারে মধুর দামও বাড়ছে না। সব মিলিয়ে এখন বিষয়টিতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন মালদার মধু চাষিরা।

মালদার মধু চাষিদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৌমাছি পালকদের নানা বিষয়ে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে মৌমাছি বাঁচানোর ক্ষেত্রে কী কী পন্থা নেওয়া যায় সেব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রশিক্ষণ তাঁরা পাননি। গত নভেম্বর মাসে এক ধরনের সাদা পোকার আক্রমণে বহু মৌমাছির মৃত্যু হয়েছে। ফলে এবছর মধু উৎপাদনের মাত্রাও অনেক কমে গিয়েছে। তাই আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মৌ-পালকরা।

মালদা জেলায় সবচেয়ে বেশি কৃত্রিম মৌমাছির চাষ হয়ে থাকে পুরাতন মালদা, হবিবপুর ব্লকে। বিভিন্ন সর্ষের জমির আশেপাশে এবং আমবাগানগুলিতেও কাঠের বাক্সে ফ্রেম তৈরি করে মৌমাছির প্রতিপালন করেন অসংখ্য চাষি। এক্ষেত্রে প্রতিদিনই প্রয়োজন মতো চিনি দিয়ে কাঠের বাক্সে মৌমাছিদের পালন করতে হয় চাষিদের।

পুরাতন মালদার সাহাপুর পঞ্চায়েতের সাদৌলের মৌ-পালক সুভাষ মণ্ডলের কথায়, “গত মাসেই অজানা রোগে ৫০ শতাংশ মৌমাছি মারা গিয়েছে। কাঠের বাক্সে কৃত্রিম উপায়ে মৌ-পালন এবং মধু উৎপাদন করা হয়। তা এবার অনেকটাই কমে গিয়েছে। বর্তমান বাজারে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কিলো দরে পাইকারেরা মধুর দাম দিচ্ছে। কিন্তু এর দাম কমপক্ষে ১৫০ টাকা হওয়া উচিত। এছাড়াও এবছর সর্ষের ফুলে মিষ্টি রস উৎপাদন না হওয়ার কারণেই মৌমাছিদের বেশি করে চিনি দিয়ে পালন করতে হচ্ছে। সেদিকেও একটা মোটা টাকা খরচ হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে অসংখ্য চাষিকে।”

উল্লেখ্য ,পুরাতন মালদার সাহাপুর পঞ্চায়েতের মালদা-নালাগলো রাজ্য সড়কের ধারে আমবাগান ও সর্ষের জমির আশেপাশেই রয়েছে অসংখ্য কৃত্রিম মৌমাছি পালনের বাক্স। এখান থেকে মধু উৎপাদনের পর বিভিন্ন পাইকারেরা আগাম টাকা দিয়ে চাষিদের কাছ থেকে মধু কিনে নিয়ে যান। কিন্তু এবছর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণেই মধু উৎপাদনে অনেকটাই ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক মৌপালকেরা। পুরাতন মালদার বিডিও সেজুতি পাল মাইতি অবশ্য জানিয়েছেন, মৌ-পালকদের এমন সমস্যার কথা তাঁর জানা নেই। যদি তাঁদের কোন দাবি-দাওয়া থাকে সেই সম্পর্কে বিষয়টি নির্দিষ্টভাবে জানতে পারলে অবশ্যই তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *