পুজো পান না সৃষ্টিকর্তা হয়েও ! ব্রহ্মার মন্দির রয়েছে একমাত্র ভারতেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : সৃষ্টিকর্তা হয়েও সেভাবে পুজো পান না ব্রহ্মা, একমাত্র ব্রহ্মার মন্দির রয়েছে ভারতেই। কোথায় জানেন? যেখানে নিজের ভাগ্য নিজেই লেখেন ভক্তরা। এই মন্দিরের পবিত্র হ্রদে স্নান করলেই পূরণ হয় মনের সব ইচ্ছা। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত ব্রহ্মাজির দর্শনে এখানে ছুটে আসেন। মনের ইচ্ছা পূরণ করতে ডুব দেন হ্রদে। বলা হয় এখানে স্নান না করলে কোনো তীর্থ যাত্রা সম্পন্ন হবে না। এই মন্দির দর্শন চার ধাম যাত্রার সমান। ব্রহ্মাজির মন্দিরেই রয়েছে অলৌকিক সব কাহিনী। জানলে এই গা ছমছম করবে। একবার হলেও যেতে ইচ্ছা হবে।

গোটা বিশ্বজুড়ে প্রচুর শিব বা বিষ্ণুর মন্দির পাবেন, কিন্তু ব্রহ্মার মন্দির কি পাবেন? পৃথিবীতে এক জায়গাতেই রয়েছে ব্রহ্মার মন্দির। যেখানে ভক্তদের সমস্ত মনের বাঞ্ছা মনের ইচ্ছা পূরণ হয়। এই মন্দিরে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে রাজস্থানের পুষ্করে। একসময় পুষ্করে মুঘল শাসকদের আক্রমণ হিন্দু মন্দির গুলো ধ্বংস হলেও, অটুট রয়েছে ব্রহ্মাজির মন্দির। বলা হয় এখানে স্নান না করলে বিফলে যাবে চারধাম যাত্রা। রাজস্থানের পুষ্করের এই মন্দির ব্রহ্মার নিবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে কার্তিক মাসে মন্দির তীর্থযাত্রীদের ভিড়ে গম গম করে। সবার একটাই লক্ষ্য, মন্দিরের হ্রদে ডুব দিয়ে পূণ্য অর্জন করা। বেনারস ও প্রয়াগের ঠিক যতটা গুরুত্ব ততটাই গুরুত্ব রয়েছে পুষ্করের ব্রহ্মাজির মন্দিরের। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, ব্রহ্মা হলেন ত্রিদেবের মধ্যে অন্যতম, তাঁকে বলা হয় সৃষ্টিকর্তা। ব্রহ্মার প্রতিটি হাতে রয়েছে বেদরূপী জ্ঞান। কিন্তু জানেন কি সৃষ্টিকর্তা হয়েও কেন মানুষের হাতে পুজো পান না? শুনুন তাহলে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, এক শুভ সময়ে পবিত্র উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সস্ত্রীক যজ্ঞ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ব্রহ্মা। কিন্তু তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী অপেক্ষা করতে বলেন। আর তাতেই রেগে ব্রহ্মা গোয়াল বালিকা রূপী গায়েত্রীকে বিবাহ করে সেই যজ্ঞে অংশগ্রহণ করান। স্বামীর সাথে অন্য নারীকে দেখে প্রচণ্ড রেগে যান সাবিত্রী। তিনি ব্রহ্মাকে অভিশাপ দেন, একদিন পৃথিবীর মানুষ ব্রহ্মাকে ভুলে যাবেন। তাঁকে কোনদিনও আরাধনা করবেন না। তখন ব্রহ্মার হয়ে অন্যান্য দেবতারা প্রার্থনা করেন সাবিত্রীর কাছে। তখন তিনি জানান একমাত্র পুষ্করে ব্রহ্মার আরাধনা হবে। পদ্মপুরাণের কাহিনী অনুযায়ী, পুষ্করের হ্রদটি নাকি তখনই নির্মিত হয়েছিল যখন যজ্ঞের সময় ব্রহ্মার হাত থেকে একটি পদ্মফুল পৃথিবীতে পড়ে। পুষ্কর বলতে বোঝায় এমন একটি পুকুর যা ফুল দিয়ে তৈরি। ব্রহ্মার হাত থেকে সেদিন পৃথিবীতে পড়েছিল ৩ ফোঁটা জল, যার এক ফোঁটা জল গিয়ে পড়ে পুষ্করে, তৈরি হয় পবিত্র হ্রদ।

পুষ্করে গেলে দেখতে পাবেন ঝাঁ চকচকে একটি সুন্দর ব্রহ্মাজির মন্দির। মারবেল পাথরে তৈরি মন্দিরটি সাজানো হয়েছে রুপোর কয়েন দিয়ে। কথিত আছে, পুষ্কর হ্রদ তৈরি হয়েছে ব্রহ্মার একক পদ্ম পাতা দিয়ে যার কারণে হিন্দুদের কাছে এই হ্রদের গুরুত্ব অনেকটা বেশি। গর্ভগৃহে ব্রহ্মাজির চার মুখী মূর্তির সঙ্গে রয়েছে স্ত্রী গায়ত্রী ও সাবিত্রীর মূর্তি। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশাল বড় করে এখানে মেলা বসে, গোটা বিশ্ব থেকে হাজার হাজার ভক্ত এই মেলায় আসেন ব্রহ্মার পুজো করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *