বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছে বিজেপি , বাংলাপক্ষের আন্দোলন মহামিছিলে স্লোগান তুলে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বিজেপি বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছে! বাংলাপক্ষ ফের একবার পথে নামল এই স্লোগান তুলে। রবিবার বাংলাপক্ষ কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মহামিছিল করল বিজেপির বঙ্গভঙ্গ চক্রান্তের বিরুদ্ধে। এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিল মূলত হাজার হাজার বাঙালি নাগরিক।বাংলাপক্ষের আরও দাবি, বাংলা ও বাঙালির প্রধান শত্রু বিজেপি-আরএসএস চক্রান্ত করছে বাংলার উত্তর দিকের জেলাগুলোকে বাংলা থেকে ভাগ করে আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার। আর বাংলা পক্ষ কলেজষ্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত এক মহা মিছিল সংগঠিত করে এরই প্রতিবাদে সামিল হয়ে ।
এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. গর্গ চট্টোপাধ্যায়। এমনকি উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ পরিষদ সদস্য কৌশিক মাইতি , চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস, মনন মণ্ডল, শোয়েব আমিন, অমিত সেন, কালাচাঁদ চট্টোপাধ্যায়, মনোজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্টরা । এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সম্পাদক প্রবাল চক্রবর্তী, কলকাতা জেলার সম্পাদক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, হাওড়া জেলার সম্পাদক জয়দীপ দে, হুগলী জেলার সম্পাদক দর্পণ ঘোষ, উত্তর চব্বিশ পরগণা শহরাঞ্চলের সম্পাদক পিন্টু রায়, উত্তর চব্বিশ পরগনা শিল্পাঞ্চলের সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ, পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সম্পাদক অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর চব্বিশ পরগণা গ্রামীনের সম্পাদক দেবাশিষ মজুমদার, বাঁকুড়ার জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য নাথ, পূর্ব বর্ধমানের সম্পাদক জুয়েল মল্লিক, পূর্ব মেদিনীপুরের সম্পাদক সুতনু পণ্ডিত, বাংলা শ্রমিক পক্ষর অভিজিৎ কুন্ডু প্রমূখ।
গর্গ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন “আমরা ব্যর্থ করবোই বাংলা ভাগের এই ঘৃণ্য চক্রান্ত। বাংলা পক্ষর মিছিল থেকে প্রমাণ হল বাঙালি আবার জেগে গেছে। এবং আমার মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় জন্য, বাংলা থেকে আমাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিজেপি চক্রান্ত করছে। বিজেপি আমাকে বাংলা থেকে সরিয়ে দিতে পারে কিন্তু আমার হৃদয় থেকে বাংলাকে সরাতে পারবেনা।
কৌশিক মাইতি এদিন বলেন, “গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপর আঘাত হানলে প্রতিবাদের আগুন জ্বলবে বাংলার প্রতিটি জেলা বাংলার প্রতিটি ঘরে।” তিনি আরো বলেন, “বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার উত্তরের জেলাগুলোকে শ্মশানে পরিণত করে চায় তিস্তার জল বাংলাদেশে পাঠিয়ে। এখনো পর্যন্ত কেন্দ্র তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারেনি বাংলার সরকার রাজি না হওয়ায় । দিল্লী তিস্তার জল সহজেই বাংলাদেশে পাঠাতে পারবে বাংলার উত্তরের জেলাগুলোকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করতে পারলে। এখনও পর্যন্ত বাংলার সরকার এই চক্রান্ত আটকে রেখেছে। কিন্তু বাংলা ভাগ হলে আর বাংলার সরকারের হাতে থাকবে না উত্তরের জেলাগুলোর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ । বিপন্ন হয়ে যাবে উত্তরের জেলাগুলোর বাঙালি সহ ভূমিপুত্রদের অস্তিত্ব।
কৌশিক মাইতি আরো বলেন, “একটি জাতিকে দুর্বল করে দেওয়ার সবথেকে সহজ উপায় হল টুকরো টুকরো করে দেওয়া তার মাতৃভূমিকে । ভূমিপুত্রদের ঐক্য ধ্বংস করে দেওয়া। বাঙালি জাতি হিসাবে টুকরো টুকরো হলে তাতে লাভ বাঙালি বিদ্বেষীদেরই। বাংলার উত্তরের জেলাগুলো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলে কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে গোটা এলাকার জমি, অর্থব্যবস্থা, পুলিশ সবই। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসি করে ভূমিপুত্রদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে তাদের নিজের মাতৃভূমি থেকে বেদখল করে, তাদের জমি দোকান সম্পত্তি রাখার অধিকার কেড়ে নিয়ে উত্তরপ্রদেশ -বিহার-ঝাড়খণ্ড-রাজস্থান থেকে বহিরাগত ঢুকিয়ে অত্যাচার চালাবে এলাকার ভূমিপুত্রদের ওপর। তাদের পছন্দের গুজরাট রাজস্থানের পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেবে উত্তরের জেলাগুলোর প্রাকৃতিক সম্পদ। সেখানে বাঙালি সহ ভূমিপুত্রদের সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন করে দেওয়া হবে।