মহা জাগ্রত এক মন্দির, যেখানে নিজের ভোগের ব্যবস্থা করেন দেবী নিজেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : সুতানুটি, গোবিন্দপুর এবং কলকাতা। এই তিন গ্রামের সমন্বয়ে তৈরি আজকের মহানগরী কলকাতা। এই মহানগরীতে মধ্য কলকাতা বলে পরিচিত পুরনো কলকাতা গ্রাম। যার অন্তর্গত কলেজ স্কোয়ার এবং কলেজ স্ট্রিট অঞ্চল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই এলাকাতেই রয়েছে বিখ্যাত ও জাগ্রত দয়াময়ী কালীবাড়ি। যা দয়াময়ী ভবন নামেও পরিচিত। এই মন্দির রয়েছে কলেজ স্কোয়ারের কাছে রাধানাথ মল্লিক লেনে।

মন্দিরের গায়ে লেখা ইতিহাস অনুযায়ী, বাংলার ১১৭৮ সালে অথবা ইংরেজির ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমীতে এই কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সঙ্গে শুরু হয়েছিল দেবীর পুজোর সূচনা। সেবায়েত বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। কথিত আছে, এই মন্দিরের দেবীমূর্তি পুকুরে পাওয়া গিয়েছিল। তারপর তৈরি হয়েছে দেবীর মন্দির। দেবী দয়াময়ী দক্ষিণাকালীর সিংহাসন কারুকার্যময় ও কাঠের তৈরি। দেবীর বিগ্রহ কালো রঙের ও পাথরের। এই মন্দিরে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন।

দেবীর ভৈরবরূপী দুই শিবলিঙ্গ হরনাথ ও শিবনাথ রয়েছে শ্বেতপাথরের বেদীতে প্রতিষ্ঠিত। এই মন্দিরে বাসুদেব, দামোদর, রাজরাজেশ্বর শালগ্রাম শিলারও নিত্যপূজা করা হয়। এই মন্দির যেহেতু জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাই দেবী সিংহবাহিনীকেও এখানে দেবী জগদ্ধাত্রীর সঙ্গে পুজো করা হয়। দেবী যেহেতু দীর্ঘদিন পুকুরে ছিলেন, তাই এখানে দেবীর মৎস্যভোগ দেওয়া হয়। কথিত আছে শোলমাছ ও চিংড়িমাছ দেবীর অত্যন্ত প্রিয়। মাছ না-হলে দেবী অভুক্তই থাকেন।

দেবী দয়াময়ীর মৎস্যপ্রীতি নিয়ে কাহিনি প্রচলিত আছে। কথিত আছে, ১৯৭৮ সালের বন্যায় কলেজ স্ট্রিট অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। সেই সময় দেবী দয়াময়ীর ভোগ নিবেদন করাই সেবায়েতদের কাছে কঠিন হয়ে পড়েছিল। সেই সময় মন্দিরে ঢুকে আসা জলে আপনা থেকেই মাছ ভেসে উঠেছিল। সেই মাছই দেবীকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়েছিল। পাশাপাশি, সেবায়েতরাও দেবীর প্রসাদ পেয়ে ধন্য হয়েছিলেন। তারপর থেকেই ভক্তরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, দেবী এখানে প্রয়োজনে নিজের ভোগ নিজেই জোগাড় করে নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *