হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা নাকি টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পিছনে রয়েছে আরও কোনও বড় রহস্য? জেনে নিন অজানা ইতিহাস
বেস্ট কলকাতা নিউজ : আমরা প্রায় সকলেই পরিচিত আর.এম.এম.এস টাইটানিক’ ব্রিটিশ যাত্রীবাহি বৃহদাকার এই সামুদ্রিক জাহাজটির সঙ্গে। জাহাজটি ১৯১২ সালের ১৩ এপ্রিল বিশাল এক হিমশৈলে ধাক্কা খেয়ে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে তলিয়ে গিয়েছিল সাউথ হ্যাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে।
তারপর অনেকগুলি বছর কেটে গিয়েছে কালের নিয়মেই। কিভাবে ডুবল বিলাস বহুল টাইটানিক চুলচেরা বিশ্লেষনও হয়েছে এমনকি তা নিয়েও ,রয়েছে এমনকি বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমতও।তবে আমাদের জেমস ক্যামেরনকে ধন্যবাদ কিন্তু জানাতে হবে সব কিছু অতিক্রম করেই। কারন তাঁর জন্যই সিনেমা হলে বসে হাজার,হাজার দর্শক সেই বিভীষিকাময় রাতের ঘটনা আজও উপলদ্ধি করতে পারেন। তবে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন বা মনে করেন যে, শুধুমাত্র এতো বড় জাহাজের ডুবে যাওয়ার কারণ একটি মাত্র হিমশৈল হতে পারে না। আরও এক রহস্যময় ইতিহাস এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে।
সবার কাছে আর যা এখনও অজানা। আর মিলা জিনকোভা নামের একজন স্বাধীন গবেষক এই অজানা রহস্যের তথ্য উন্মোচনে আগ্রহী হয়েছেন। ঠিক কি হয়েছিল ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে তিনি তা পুনর্বিবেচনা করতে চান। আর সেই উদ্দ্যশেই নতুন করে আলোচনা গবেষণা শুরু হয়েছে টাইটানিক নিয়ে।আরো জানা গিয়েছে, আইস বার্গের পাশাপাশি সোলার আফ্লেয়ার্স গুলিও অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল বিখ্যাত এই সুবিশাল জাহাজটি ডুবে যাওয়ার পিছনে। বিজ্ঞানীদের মতে এই সোলার আফ্লেয়ার্স বা সৌরশিখা গুলি প্রভাবিত করতে পারে ঝড়, সূর্যের পৃষ্ঠের তাপের হঠাৎ বৃদ্ধি যা পৃথিবীতে যোগাযোগ এবং উপগ্রহগুলিকে।
জিনকোভার মতে ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিলের রাতে টাইটানিক যখন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে চলেছিল তার আগে রেডিওর মাধ্যমে টাইটানিকে একটি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল ‘মাসাবা’ নামের একটি জাহাজ থেকে । কিন্তু সেই বার্তাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করেছিলেন সেই সময় যারা টাইটানিকের রেডিও যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন তারা এবং যারফল স্বরূপ টাইটানিকের সম্মপূর্ন অংশ অ্যাটলান্টিকের গভীরে তলিয়ে যায় রাত ২ টো থেকে ২ টো ২০ মিনিটের মধ্যেই।
শুধু তাই নয়,তাঁর আবহাওয়া সংক্রান্ত একটি জার্নালে জিনকোভা আরও জানিয়েছেন, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সময় সেখান থেকে ১৩ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করেছিল আরও একটি জাহাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি টাইটানিক থেকে রেডিও বার্তায় তাদের অবস্থান সম্পর্কিত যাবতীয় ভুল তথ্য দেওয়ায়। প্রায় ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট ধরে ডুবে যাওয়ার এই ঘটনায় হিমশীতল জলে ডুবে মারা গিয়েছিলেন কমপক্ষে ১৫,০০ যাত্রী।
‘মেয়াডাব্লু ডটকমের’ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে জিনকোভা এও জানিয়েছেন, সেই রাতে একটি শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ে তৈরি হয়েছিল উত্তর আটলান্টিকে । তবে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে জিনকোভার এই গবেষণার ফলাফলের ক্ষেত্রে । তিনি আরও বলেছেন যে,কম্পাসকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এ জাতীয় ঝড়ের সামান্যতম একটি পরিবর্তনও। যা ছিল ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে প্রযুক্তিগত নির্দেশিকার প্রাথমিক উৎস্য।
এছাড়াও বিশ্ববিখ্যাত এই জাহাজটির ডুবে যাওয়ার পিছনে শুধু আইস বার্গ বা কম্পাস নয়, অপেশাদার রেডিও অপারেটরও ছিল এর পিছনে। ভূতাত্ত্বিক অবস্থা সম্পর্কে সেভাবে প্রাথমিক ধারণা না থাকায় শুধুমাত্র তাদের হেয়ালিপনায় অতবড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল বলেও অনেকে মনে করেন।