৫২ বছর পূর্তি হল বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বক্তব্যের, একগুচ্ছ অনুষ্ঠান পালিত হল শহর কলকাতায়
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে বঙ্গবন্ধুর সেই দিনের ভাষণ যে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদানের ৫২বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করল কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
বাঙালিদের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে এক নতুন ভরসা স্থল হয়ে উঠেছিল। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে প্রায় লক্ষ লক্ষ জনতার উদ্দেশ্যে এই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলি কালজয়ী ভাষণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এটি। সেদিন বঙ্গবন্ধুর কথা শুনে বাঙালি শুধুমাত্র সাহস আর বিশ্বাসে ভর করে পাকিস্তানি হানাদারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। প্রায় নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধের পর বাংলাদেশ পেয়েছিল স্বাধীনতা। বাংলার মানুষের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আত্মার সম্পর্ক। বাংলাদেশ আজ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই জায়গায় আসার জন্য পথ ছিল চড়াই উতরাইয়ে ভরা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নত স্মার্ট এবং সমৃদ্ধশালী রূপে গড়ে তুলতে ‘রূপকল্প ২০৪১’ ঘোষণা করেছেন।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপহার কমিশনের ৭ই মার্চ সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কার্যক্রমের সূচনা করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকালে আয়োজন করা হয়েছিল একাধিক অনুষ্ঠানের। যেখানে আন্দালিব ইলিয়াসের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ গ্যালারিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞ এটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন। আলোচনার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি প্রদর্শিত হয়েছে। ৭ই মার্চের ভাষণকে চিরন্তন প্রেরণার উৎস এবং একটি অনন্য রণকৌলের দলিল বলে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।
৭ ই মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে ঢাকার রমনায় রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কথাগুলি বলেছিলেন তা আজও বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের কাছে অমর হয়ে রয়েছে। ১৮মিনিটের সেই ভাষণে তিনি নির্যাতিত বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য আহ্বান জানান। তাঁর সেই আহ্বানে নিরস্ত্র বাঙালি সেদিনকে বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর। এই দিনটি আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। গোটা বিশ্বজুড়ে ৭ ওই মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রশংসিত এবং আলোচিত। এই ভাষণটি প্রায় ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে ডকুমেন্টারি হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ৭ই মার্চের এই ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যমূল্য। অনেকে মনে করেন, কাব্যিক ছন্দের এই ভাষণ প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘ কবিতা। যা বহু মানুষকে নতুন করে বাঁচার রসদ যুগিয়েছে।