৮০ ফুট গর্তের নীচ থেকে শিশু উদ্ধার হল টানা ১১৭ ঘন্টা লড়াইয়ের পর
বেস্ট কলকাতা নিউজ : উদ্ধারকারী অনিল কুমার কাঁদতে পারেননি ৮০ ফুট গভীরে পড়া শিশুর করুণ দশা দেখেও। বরং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এই সদস্য বুকে ভর দিয়ে উপুড় হয়ে টানা ১১৭ ঘণ্টা কথা বলে গিয়েছেন শিশুটিকে জাগিয়ে রাখতে। জানা গেছে ছত্তিশগড়ের জাঞ্জগীর-চাম্পা জেলার পিহরিদ গ্রামে নিজ বাড়ির পেছনে একটি পরিত্যক্ত কুয়ার ভেতর পড়ে যায় শিশুটি। যার নাম রাহুল। তারপর থেকেই এনডিআরএফ, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীসহ (এসডিআরএফ) পুলিশের উদ্ধারকারী দল তাকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে।
উদ্ধারকাজ চলাকালে শিশুটির কাছে শুকনো খাবার ও অক্সিজেন পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় একটি পাইপের মাধ্যমে । এমনকি বিশেষ রোবটও নেওয়া হয় উদ্ধার কাজের জন্য। তবু উদ্ধারকারীদের প্রায় পাঁচদিন সময় লেগে যায় রাহুলকে উদ্ধার করতে। এই দীর্ঘ সময় যারা প্রাণান্ত চেষ্টা চালান তাকে বাঁচিয়ে রাখতে, তাদেরই একজন এনডিআরএফ সদস্য বি অনিল কুমার। ‘রাহুল ওঠো… রাহুল জেগে আছো?… রাহুল, তোমার জন্য কলা এনেছি…’ প্রায় পাঁচদিন কুয়ার ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে এমন অনেক কথাই বলে গেছেন অনিল।
এদিকে ১১ বছর বয়সী শিশুটি কানে শোনে না, কথাও বলতে পারে না, ফলে অনিল ক্রমশ বিষণ্ন হয়ে পড়েন তার কাছে এই বার্তা পৌঁছানো কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, তা স্মরণ করতে করতেই। তিনি বলেন, রাহুলকে অনবরত ডেকে গেছি। গলার আওয়াজের যে কম্পন, সেটি পৌঁছাচ্ছিল তার কাছে। আমার সেই ডাকে শিশুটি সাড়াও দিচ্ছিল। এদিকে দড়ির সাহায্যে কুয়ার ভেতরে ক্যামেরা পাঠানো হয় রাহুলের অবস্থান জানতে। অনিল বলেন, সেই ক্যামেরার মাধ্যমে দেখার চেষ্টা করছিলাম, রাহুল রয়েছে ঠিক কী অবস্থায়। প্রথমে মনে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, ছেলেটি বেঁচে রয়েছে তো? কিন্তু মনে জোর পাই ক্যামেরায় ওর নড়াচড়া দেখে। নিজেকে বারবার বলছিলাম, বাচ্চাটিকে বাঁচাতেই হবে।