ক্রমশ চড়ছে ভোটের পারদ , কর্নাটকে পদ্ম ঝড় রুখতে কংগ্রেসের বাজিমাত সুক্ষ চাল চেলে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ‘অপারেশন লোটাস সব সময় সফল হতে পারে না…! বিজেপি যদি আবার চেষ্টা করে, তবে শোচনীয়ভাবে তা ব্যর্থ হবে’ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী নেতা সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘১০ ই মে রাজ্যে যে ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তাতে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে’।
এদিকে কর্ণাটকে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপিও। সামনেই কর্ণাটক নির্বাচন! তার আগে রবিবার কোলারে জনসভা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই সমাবেশ থেকে তিনি বিরোধীদের তীব্র নিশানা করেন। জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি প্রথমে সেখানে উপস্থিত জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান। কংগ্রেস ও জেডিএসকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘এই দুই দলই কর্ণাটকের উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে’। তিনি বলেন, ‘এই দুই দলকে একসঙ্গে ক্লিন বোল্ট করতে চলেছে কর্ণাটকের মানুষ’।
কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কোলারে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে, কংগ্রেস-জেডিএস-কে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, যে যতদিন এখানে কংগ্রেস-জেডিএস জোট ছিল, কর্ণাটকের উন্নয়ন থমকে ছিল। বিজেপির সংকল্প কর্ণাটককে ভারতের এক নম্বর রাজ্যে পরিণত করা।
সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘বিজেপি মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। দলের নেতারা দলত্যাগ করে কংগ্রেসে আসছেন। তিনি বলেন, “আমরা ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলাম, এবং যদিও আমরা তখন বিজেপির থেকে আমরা বেশি ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসি। তারপর মানুষ আমাদের চাইনি তাই সরকারে থাকতে পারিনি। তবে এবারের নির্বাচন একেবারে আলাদা। জাতীয় রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকেও আসন্ন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা এই নির্বাচনে জয়ী হই, তাহলে জাতীয় রাজনীতির জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনেই লোকসভা নির্বাচন’। তিনি এও বলেন, “আমি বরুণা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি কারণ দলীয় হাইকমান্ড এটাই অনুমোদন করেছে,”। সিদ্দারামাইয়া বলেন, কংগ্রেস এবার নির্বাচনে ১৩০ টিরও বেশি আসন জিতবে বলেই আশা। কংগ্রেসযথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফের একবার ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বলেও আশাবাদী তিনি।
রাজ্যে মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। এনিয়ে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, “সংরক্ষণ নিষিদ্ধ সাংবিধানিক পদক্ষেপ নয়।” এটা গ্রহণযোগ্য নয়…! ভোক্কালিগা এবং লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ বাড়াতে আমাদের কোন আপত্তি নেই, তা বলে কেন মুসলমানদের সংরক্ষণ কমিয়ে দেওয়া হল? তিনি আরও বলেন, এটা স্পষ্টভাবেই বিজেপির ঘৃণার রাজনীতির পরিচয়”।
আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের লড়াইয়ের ইস্যু প্রসঙ্গে সিদ্দারামাইয়া বলেন, “এই সরকারের আমলে একের পর দুর্নীতি সামনে এসেছে। কর্ণাটকের ইতিহাসে এবং আমার ৪০ বছরের রাজনৈতিক কেরিয়ারে আমি এমন সরকার দেখিনি। প্রতিটি কাজের জন্য ঘুষ এবং কমিশন দাবি করে এই সরকার”।
তিনি কংগ্রেস সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন বলেন, ‘আমরা পাঁচ বছরে ১৫ লাখ বাড়ি তৈরি করেছি। এই সরকার যাদের ঘর নেই তাদের একটি ঘরও দেয়নি এই সরকার গরিবদের জন্য কিছুই করেনি”। সরাসরি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ব্যর্থ হবে বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’! বিজেপি চেষ্টা চালিয়ে দেখতে পারে’।
কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র সাত দিন বাকি। এদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পর কংগ্রেসও তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। দুই দলের তরফেও একাধিক প্রতিশ্রুতি মিলেছে আবার প্রশ্ন উঠেছে একে অপরের ঘোষণা নিয়েও। বিজেপি তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে নাম দিয়েছে ‘প্রজা ধ্বনি’। একই সঙ্গে কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির নাম দিয়েছে ‘সংকল্প পত্র’।
বিজেপির ইস্তেহারে দরিদ্রদের জন্য বছরে তিনবার বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে শুরু করে কৃষক, মহিলা এবং শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের ঘোষণায়, প্রতিটি মহিলা পরিবারের প্রধানকে প্রতি মাসে ২০০ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ থেকে প্রতি মাসে ২০০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসও বিদ্বেষী সংগঠন নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম বজরং দলের। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কেন কংগ্রেস বজরং দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল? ১০ মে রয়েছে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সদ্য কংগ্রেস প্রকাশ করেছে তাদের দলীয় ইস্তেহার। সেই ইস্তেহারেই উল্লেখ রয়েছে যে, যদি কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকার আসে, তাহলে বজরং দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। এছাড়াও কংগ্রেস জানিয়েছে, বজরংদল, পিএএফআইয়ের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে তারা কড়া পদক্ষেপ নেবে। মূলত কংগ্রেস , বজরং দল ও পিএফআউকে একই সারিতে বসিয়ে তুলনা টেনেছে।