একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু ২০ দিনে, সর্ষের মধ্যেই ভূত! বেরল তদন্তে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মাত্র ২০ দিনের ব্যবধান। পরপর মৃত্যু একই পরিবারের ৫ জনের। গোটা পাড়ায় রটে গিয়েছিল, ওই পরিবারের উপরে নিশ্চয়ই অভিশাপ রয়েছে। ভয়ে ধারে-কাছেও ঘেষছিলেন না কেউ। তবে পুলিশ এই যুক্তিতে বিশ্বাস করতে নারাজ। শুরু হয় তদন্ত। চিকিৎসকেরাও দেখেন, মৃতদের সকলেরই অসুস্থতার উপসর্গ এক ছিল। এরপরই সন্দেহ হয়, নিশ্চয়ই বিষক্রিয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে চারটি মেডিক্যাল টিমও পাঠানো হয়। তদন্ত যখন কোনও দিশাই মিলছিল না, সেই সময়ই হাতে এল মোক্ষম ক্লু। জানা গেল, সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলিতে। সেখানে মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়। তদন্তে নেমে জানা যায়, ওই পরিবারের দুই মহিলাই খুন করেছেন বাকি সদস্যদের। বুধবার সংঘমিত্রা ও রোজা নামক দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তদন্তে জানা যায়, সংঘমিত্রা তাঁর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির উপরে তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে, রোজা সম্পত্তি নিয়ে অশান্তির জেরে রেগেছিলেন। দুইজন মিলে ফন্দি আঁটেন পরিবারের সদস্যদের খুন করার। পরিকল্পনামাফিক তাঁরা পরিবারের সদস্যদের খাবারের মধ্যে আর্সেনিক মিশিয়ে দেন।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই খাবারে অল্প অল্প করে বিষ মেশাতে শুরু করেন দুইজন। প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন শঙ্কর কুম্ভারে ও তাঁর স্ত্রী বিজয়া। প্রাথমিকভাবে খাবারে বিষক্রিয়ার উপসর্গ দেখা গেলেও, দ্রুত তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। শরীরে ব্যাথা, হৃদযন্ত্রে সমস্য়া দেখা যায়। প্রথমে তাদের একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে নাগপুরের একটি হাসপাতালে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় শঙ্কর কুম্ভারে। পরেরদিন মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর।
এর দিনকয়েক পরেই ওই দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৮ অক্টোবর কোমল নামক যুবতীর মৃত্যু হয়। ১৪ ও ১৫ অক্টোবর বাকি দুইজনেরও মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, এদের সকলেরই উপসর্গ এক ছিল। পেশিতে অদ্ভুত অনুভূতি, পিঠে ব্যাথা, মাথা ব্যথা, ঠোট কালো ও জিভ ভারী হয়ে যাওয়া।
আর্সেনিক বিষক্রিয়ার সন্দেহ হতেই চারটি বিশেষ মেডিক্য়াল টিম পাঠানো হয়। মহারাষ্ট্র ও তেলঙ্গানায় ওই টিম পাঠানো হয়। পরে পুলিশি জেরাতেই জানা যায়, ওই পরিবারের দুই সদস্য়ই খাবারে অল্প অল্প করে আর্সেনিক মিশিয়ে খাওয়াচ্ছিল পরিবারের সদস্যদের। এর জেরেই বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয় পরিবারের ৫ জনের।
জেরায় জানা যায়, সংঘমিত্রা পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিল রোশনকে। সম্প্রতিই তাঁর বাবা আত্মহত্যা করে। এরপর থেকেই মনমরা থাকত সংঘমিত্রা। স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে অশান্তির জেরেই তিনি রেগে খুন করেন। তাঁকে মদত দেন রোজা।