এখন থেকে আর হাতি মরবে না ট্রেনের ধাক্কায় , তাক লাগানো এক আবিষ্কার শ্রমিকের ছেলের

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রতি বছর উত্তরবঙ্গে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় বহু হাতির। ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার হিসেব অনুযায়ী, ১৯৮৭ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই ভাবে ১৬০-রও বেশি হাতির মৃত্যু হয়েছে। রেল লাইন পার হতে গিয়ে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যু উত্তরবঙ্গের একটা বড় সমস্যা। রেললাইনের একটা বড় অংশ রয়েছে জঙ্গলের মধ্যে। শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, ভারতের যেখানে যেখানেই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে রেললাইন পাতা রয়েছে, সব জায়গাতেই এটা একটা গুরুতর সমস্যা। তামিলনাড়ুতেই যেমন গত ১০ বছরে ৩৬টি হাতি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে। সমাধানের অনেক উপায় ভাবা হয়েছে, কার্যকরী হয়নি কোনোটাই। এবার, রেললাইনের বন্যপ্রাণীর মৃত্যু ঠেকাতে একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৈরি করে ফেলল তামিলনাড়ু এক শ্রমিকের ছেলে।

থানজাভুর সরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র স্যাম জেফারসন। এই ছেলেই মাত্র চার দিনের প্রচেষ্টায়, সামান্য খরচে তৈরি করে ফেলেছে ‘অটোমেটিক বার কন্ট্রোলিং ফরেস্ট অ্যানিমাল অ্যাকসিডেন্ট’। এটাই তাঁর সরল যন্ত্রের গালভরা নাম। সাধারণত রেললাইন পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী ট্রেনের দ্বারা বা বৈদ্যুতিক বেড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বন্যপ্রাণীদের মৃত্যু হয়। স্যাম জেফারনের আবিষ্কারটি করা যন্ত্রটির মূল লক্ষ্য হল, রেললাইনের কাছ থেকে পশুদের দূরে রাখা।

অটোমেটিক বার কন্ট্রোলিং ফরেস্ট অ্যানিমাল অ্যাকসিডেন্টে, দুর্ঘটনা থেকে প্রাণীদের রক্ষা করার জন্য দুটি স্বংয়ক্রিয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি সাইরেন, একটি সাবমার্সিবল মোটর পাম্প এবং একটি রিলে ডিভাইস – এই তিনটি ছোট অংশ দিয়ে ব্যবস্থাটি তৈরি করেছে স্যাম। কোনও প্রাণী রেললাইনের কাছাকাছি এসেছে, তা এই যন্ত্রে ধরা পড়লেই প্রথমে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য উচ্চস্বরে অ্যালার্ম বাজতে থাকে। তাতে যদি কাজ না হয়, সেই ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যটি সক্রিয় হয়। মোটর পাম্পটি থেকে প্রাণীদের উপর জল স্প্রে করা শুরু হয়। এতে ওই প্রাণীরা রেললাইন থেকে দূরে সরে যায়।

স্যাম জেফারসনের তৈরি এই যন্ত্রটি এখনও কোথাও বাস্তবে প্রয়োগ করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দশম শ্রেণির ছাত্রর তৈরি এই যন্ত্রটি রেললাইনের দুর্ঘটনা থেকে প্রাণীদের রক্ষা করার বিষয়ে বেশ দক্ষ। জেলা এবং আঞ্চলিক পর্যায়ের মেলায় তার এই আবিষ্কার প্রদর্শন করেছে স্যাম। সব জায়গাতেই ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে তার এই উদ্যোগ। এর জন্য সে বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং সার্টিফিকেটও পেয়েছে। গর্বিত তার স্কুলের শিক্ষকরাও। স্যামের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, তাঁর ছাত্রর এই উদ্ভাবনটি আখের মতো ফসল রক্ষার জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *