এক অভিনভ প্রতিবাদ পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির, গাড়ির শব যাত্রা খোল-করতাল বাজিয়ে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ করোনার জন্য। তার উপর যদি রাস্তায় বেরিয়ে হঠাৎ কান্নার রোলের শব্দ যদি কেউ পায় তাহলে তো তার আরও চমকে যাওয়ার কথা। পিছু ফিরতেই দেখা গেল এক অদ্ভুত শ্মশানযাত্রা। গাড়ি নিয়ে মৃতের খাটে চড়ানো হয়েছে। সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহেরও মুখাগ্নি করা হল । আসলে বলতে চাওয়া হচ্ছে ওঁরা মৃত। মানুষের এত অর্থ কষ্ট। এমন সময়ে চলে গিয়েছেন ‘কাজের মানুষরা’। তাই তাদের এই কান্না।
মূল কথা হল পেট্রোল , ডিজেলের অস্বাবাবিক মূল্যবৃদ্ধি। ওরা নেমেছে তার প্রতিবাদেই। ওদের কান্নার রোল সেই প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে। শোকে মর্মাহত প্রতিবাদিরা এক নাগাড়ে বলে চলেছেন ‘ আর উনি নেই।’ খোল করতাল, হারমোনিয়াম নিয়ে চারদিকে শেষ যাত্রার প্রস্তুতি। চিত্রটা কেমন? নামাবলি দিয়ে ঢাকা স্কুটি৷সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরও ছবি। মানুষের এমন দুঃসময়ে এরা নিখোঁজ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েও। এতদিন খোঁজ মিলছে না মানেই , একরকম ধরেই নিয়েছেন ওঁরা এরা মৃত। তাই খোল , করতাল বাজিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে চলেছেন। শব যাত্রীরা গঙ্গার দিকে যান খই, জল ছড়াতে ছড়াতে । শ্রাদ্ধ শান্তিও হয় এমনকি কুমোরটুলি নদীর পাড়ে।
এটি মূলত একটি প্রতীকী প্রতিবাদ। ‘সিটিজেনস অ্যাগেইনস্ট ডার্টি পলিটিক্স অ্যান্ড কোরাপশন’ নামে একটি সংগঠন এভাবেই পেট্রোল-ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করল। পেট্রোল-ডিজেলের বিপুল দাম বেড়েছে গত ২৫ দিনে। চমকে যাবেন এমনকি তার অঙ্ক দখলেও। দ্রুত জ্বালানির দাম বাড়ছে দু একদিন ছাড়াই। দেখা যাচ্ছে গত ২৫ দিনে পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি ৬.০৯ টাকা বেড়েছে। ডিজেলের দাম বেড়েছে ৬.৩০ টাকা ৷
গত সোমবার কলকাতায় লিটার প্রতি ২৮ পয়সা বেড়ে যায় পেট্রোলের দাম। ডিজেলের দামও বেড়ে যায় এমনকি পাল্লা দিয়ে। প্রতি লিটারে দাম বাড়ে ২৯ পয়সা। এদিকে পেট্রোল তো রাজ্যে আবার ১০০ ছুঁই ছুঁই। সোমবার ৯০ টাকা পেরোয় ডিজেল এর মূল্য। অর্থাৎ সেটিও সেঞ্চুরিমুখী বললে ভুল হবে না। গত সোমবার কলকাতায় পেট্রোলের দাম হয় লিটারে ৯৬.৩৪ টাকা। ডিজেলের দাম লিটারে ৯০.১২ টাকা।
কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এদিকে এই দাম বৃদ্ধি নিয়ে বলেছেন, ‘মানছি জ্বালানির দামবৃদ্ধিতে চরম অসুবিধা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু এক বছরে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা অর্থ সঞ্চয় করছি কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য।’অর্থাৎ তাঁর কথা অনুযায়ী পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে ভ্যাকসিনের জন্যই। এদিকে পেট্রোল-ডিজেলের এমন দাম বৃদ্ধি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর উপর ব্যাপক ভাবে প্রভাব ফেলছে। ক্রমশ বর্ধমান হচ্ছে সবকিছুর দামও। চরম আর্থিক সমস্যায় মধ্যবিত্ত পরিবার। এদিকে এই ইসু তে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরাও।