এক নতুন উচ্চতায় রতন টাটা, আস্ত পাকিস্তান কিনে নিতে পারবে মনে করলেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বাজারমূল্যে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে গেল টাটা গোষ্ঠী! প্রতিদিনের জীবনে প্রয়োজনীয় নুন থেকে শুরু করে সফটওয়্যার, বিস্তীর্ণ ক্ষেত্রে ছড়িয়ে আছে এমনকি টাটাদের ব্যবসা। গত এক বছরে স্টক মার্কেটে এই শিল্পগোষ্ঠীর আওতাধীন সংস্থাগুলি দুর্দান্ত রিটার্ণ দিয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর ফলে, টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির সম্মিলিত বাজার মূল্য এখন বর্তমানে দাড়িয়েছে প্রায় ৩০.৩ লক্ষ কোটি টাকা, বা, ৩৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ (IMF)-এর অনুমান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪-এ পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি হল, প্রায় ৩৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির সম্মিলিত বাজারমূল্য এখন পাকিস্তানের সামগ্রিক অর্থনীতির থেকেও অনেক বেশি। দিন কয়েক আগেই, প্রথম ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে টাটা গোষ্ঠীর সম্মিলিত বাজার মূল্য ছাপিয়ে গিয়েছিল ৩০ লক্ষ কোটি টাকা।
এদিকে টাটা গোষ্ঠীর আওতাধীন সংস্থাগুলির মধ্যে মূলত সবথেকে বড় হল টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএস । এই সংস্থার বাজার মূল্য বর্তমানে প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকা বা ১৭০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, শুধুমাত্র টিসিএস-এর বাজারমূল্যই পাকিস্তানের অর্থনীতির অর্ধেক। এছাড়া, টাটা গোষ্ঠীর সামগ্রিক বাজার মূল্য বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে টাটা মোটরস এবং ট্রেন্ট। টাটা মোটরসের শেয়ারের দর, এক বছরে ১১০ শতাংশ বেড়েছে। ট্রেন্টের শেয়ারের দর, ২০০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া, ভাল অবস্থায় রয়েছে গত বছরই স্টক মার্কেটে পা রাখা টাটা টেকনোলজিস, টিআরএফ, বেনারস হোটেলস, টাটা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন, টাটা মোটরস, অটোমোবাইল কর্পোরেশন অব গোয়া এবং আর্টসন ইঞ্জিনিয়ারিং।
বস্তুত, একমাত্র একটি সংস্থারই শেয়ারের দর কমেছে টাটাদের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ২৫টি সংস্থার মধ্যে। সেটি হল টাটা কেমিক্যালস। তাও মাত্র পাঁচ শতাংশ। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির বাইরেও,রয়েছে টাটা সন্স, টাটা ক্যাপিটাল, টাটা প্লে, টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেম, এয়ার ইন্ডিয়া, ভিস্তারার মতো টাটা গোষ্ঠীর আওতাধীন বেশ কিছু সংস্থা। তাদের বাজারমূল্য যোগ করলে, আরও ১৬০-১৭০ বিলিয়ন ডলার বেশি হতে পারে টাটা গোষ্ঠীর সামগ্রিক বাজার মূল্য। টাটা ক্যাপিটালের কথাই প্রথমে ধরা যাক। পরের বছরই এই সংস্থাকে মূলত স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে টাটা গোষ্ঠী। স্টক মার্কেটের বাইরে, এই সংস্থার বাজার মূল্য ২.৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
অন্যদিকে, গত কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । ১২৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা তাদের মাথায় রয়েছে। আইএমএফ-এর পক্ষ থেকে যে ৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, আগামী মাসেই তা শেষ হচ্ছে। তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার এই মুহূর্তে মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়ে আছে। এই অর্থে, মাত্র দুই মাস পর্যন্ত পাকিস্তান আমদানি করতে পারবে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য। ঋণের সঙ্গে উৎপাদনের ফারাক ক্রমে বাড়ছে। এর সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি দেখা যাচ্ছে ভারতে। ভারতের জিডিপি পাকিস্তানের থেকে প্রায় ১১ গুণ বেশি, ৩.৭ লক্ষ কোটি ডলার। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি থেকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে দৌড়চ্ছে ভারত।