কেন হয় ডাউন সিনড্রোম’!, লক্ষণ কী কী, কী করবেন? জেনে নিন
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ডাউন সিনড্রোম হল মূলত একধরনের জেনেটিক ডিসঅর্ডার। এর সরাসরি যোগ রয়েছে শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে। এছাড়া এর ফলে বাধাপ্রাপ্ত হয় বুদ্ধিমত্তার বিকাশও। ডাউন্স সিনড্রোম শিশু জন্মায় মূলত মানব শরীরের কোষের ক্রোমোজমের অসামঞ্জস্যতার জন্য। সাধারণত এই ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত হয় হাজার জনে একজন। এতে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের আইকিউ-এর মাত্রা ৫০ এর কাছাকাছি হয় যা একটি ৮-৯ বছরের বাচ্চার বুদ্ধিমত্তার সমান। আবার তার হেরফের হয়ে থাকে ব্যক্তিবিশেষেও।
১৮৬৬ সালে এই শিশুদের প্রথম চিহ্নিত করেন ব্রিটিশ চিকিৎসক জন ল্যাঙ্গডন ডাউন , তাই ডাউন সিনড্রোম নামকরণ করা হয়েছে তার নামানুসারে । প্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ শিশুর মধ্যে একজন শিশু ডাউন্স সিনড্রোম বা ডাউন শিশু হিসাবে জন্মগ্রহণ করে।বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও চিকিৎসা নেই ডাউন সিনড্রোমের । এতে আক্রান্তদের সুস্থ রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে শিক্ষিত করে তোলা ও যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে। নিচে এর লক্ষণগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
শারীরিক লক্ষণ: এতে আক্রান্তদের জিভ লম্বা হয়, মুখমন্ডল ছোট হয়, থুতনি সেভাবে বোঝা যায় না, গলা ছোট হয়। এমনকি সঠিক হয় না হাটাচলা ও মাংসপেশীর গঠন। নিউরোলজিক্যাল লক্ষণ: আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তা অনেক কম হয়। সমস্যা আরও বাড়ে ৩০ বছর বয়স পার করে গেলে। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্তরা কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন।শোনার অসুবিধা: বেশির ভাগ আক্রান্তই দৃষ্টিশক্তির অসুবিধার পাশাপাশি কানে শোনার ক্ষেত্রেও অসুবিধার মধ্যে পড়েন।
হার্টের সমস্যা: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তরা ভোগেন হার্টের সমস্যায়। কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্তদের হৃদরোগের সমস্যা হয় অল্পবয়সেই । আর কিছুক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা গুরুতর হয়ে ওঠে বয়স বাড়লে।ক্যানসার: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের ক্যানসার যেমন টেস্টিকুলার ক্যানসার ও লিউকোমিয়ায় আক্রান্তের সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়।
প্রতিরোধ : এ বিষয়ে দরকার মূলত ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা। যেহেতু ডাউন শিশু হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে মায়ের কম বা বেশি বয়সের সঙ্গে, তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধিক বয়সে, বিশেষ করে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে মা হওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়। মায়ের আগের বাচ্চাটি যদি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত পরে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রেও।
চিকিৎসা প্রণালী : এক্ষেত্রে বাচ্চার ডাউন সিনড্রোম রয়েছে কিনা তার জন্মের আগেই ধরা যেতে পারে এই বিষয়টি। এই সমস্যা ধরা যেতে পারে মূলত ভ্রূণ অবস্থায় কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে। এবার সমস্যা কাটানো যেতে পারে ভ্রূণ অবস্থায় এই রোগ ধরে ফেলতে পারলে। কিন্তু আর কিছু করার থাকে না একবার বাচ্চা জন্ম হয়ে যাওয়ার পর । নেই তেমন চিকিৎসাও। তবে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছুই নেই এই কথা শুনে। বরং আপনি বাচ্চার দিকে নজর দিন। তকে ভালো রাখুন। দিন ভালোবাসা। এভাবেই সে থাকবে ভালো। আর এখন অনেক স্কুল নিজেদের তৈরি করেছে বিশেষভাবে সক্ষম বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য। আপনি বাচ্চাকে ভর্তি করে দিতেই পারেন সেই স্কুলে। এছাড়া মনে রাখতে হবে যে, এই বাচ্চারা হল স্পেশাল। তাই দরকার স্পেশাল কেয়ার । তবেই ভালো থাকতে পারবেন সে এবং আপনি বা আপনারা।