সমাজ একটু ভাবুক ছেলেদের কথাটাও, মুম্বাইয়ের TCS কর্মীর লাইভেই চরম পদক্ষেপ অত্যাচারী স্ত্রীকে দায়ী করে!
বেস্ট কলকাতা নিউজ : অতুল সুভাষ- নামটা খুব সাধারণ হলেও, তার মৃত্যু সাড়া ফেলেছিল গোটা দেশে। স্ত্রীর মানসিক অত্যাচারে জেরে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সুইসাইড করার আগে ২৪ পাতার সুইসাইড নোট লিখে রেখে গিয়েছিলেন। অতুলের কাহিনী শুনে শিউরে ওঠে গোটা দেশ। অতুলের পর ফের স্ত্রীর অত্যাচারের বলি এক। এক বছর ধরে স্ত্রীর অত্যাচার। অবশেষে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন টিসিএস কর্মচারী। মানব শর্মা নামে ওই ব্যক্তিকে ২৪ ফেব্রুয়ারি আগ্রায় তার বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দেহ উদ্ধারের পর, মানবের পরিবার সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিস কর্মকর্তারা শিবরাত্রির ডিউটির অজুহাত দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেনি। এরপর মানবের পরিবার বিষয়টি নিয়ে সিএম পোর্টালে নিয়ে যায়।
এদিকে সদর পুলিস হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত একটি অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, চরম পদক্ষেপ নেওয়ার আগে মানব প্রায় সাত মিনিটের একটি আবেগঘন ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন। যেটা তাঁর পরিবার মৃত্যুর পর ফোনে খুঁজে পায়। ভিডিয়োটিতে মানব কাঁদতে কাঁদতে ‘পুরুষদের নিয়ে চিন্তাভাবনা এবং কথা বলার’ জন্য অনুরোধ করেন। সেখানেই তিনি তাঁর চরম পদক্ষেপের জন্য স্ত্রীকে দায়ী করেন। এবং তাঁর এই সিদ্ধান্তের জন্য বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। সবথেকে গা শিউড়ে ওঠা ব্যাপার হল, মানব ভিডিয়োটি করার সময় গলায় ফাঁস লাগিয়ে বসে রেকর্ড করেন। এবং দড়ির অন্যদিক ফ্যানের সঙ্গে বাঁধা ছিল।

ভিডিয়োটি মানব পুলিস এবং আইনের উদ্দেশ্যে রেকর্ড করেন। তিনি বলেন, ‘এটি কর্তৃপক্ষের জন্য। পুলিস এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মতো কর্তৃপক্ষেরও। আইনের উচিত পুরুষদের সুরক্ষা দেওয়া, অন্যথায় এমন সময় আসবে যখন কোনও পুরুষ অবশিষ্ট থাকবে না। এমন কোনও পুরুষ নেই যার উপর আপনি দোষ চাপাতে পারবেন।’
সেখানে কয়েক সেকেন্ড থেমে মানব বলেন, ‘আমার পরিস্থিতির কথা এবার বলি। এটা বাকিদের মতোই। আমি জানতে পেরেছি আমার স্ত্রী অন্য কারোর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। সে যাই করুক, যাক গে…’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাড়ি যেতে কোনও আপত্তি নেই। আমি বাড়ি যেতে চাই। তবুও, এখনও, আমি এটাই বলছি: দয়া করে পুরুষদের কথা ভাবুন। কেউ, দয়া করে পুরুষদের কথা বলুন। বাবা-মা, আমি খুবই দুঃখিত। আমি চলে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তাই, আমাকে যেতে দাও…।’ এখানেই শেষ নয়, মানব ভিডিয়োতে প্রকাশ করেন যে, এর আগেও তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
ছেলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবার। মানবের বাবা বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত নরেন্দ্র কুমার শর্মা জানিয়েছেন, মানব তার একমাত্র ছেলে ,মুম্বইয়ের টিসিএসে নিয়োগ ব্যবস্থাপক ছিলেন। তার মর্মান্তিক মৃত্যুর একদিন আগে, তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে মুম্বই থেকে আগ্রা ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং পরে স্ত্রীকে তার বাপের বাড়ি রেখে আসেন। মানবের বাবা দাবি করেন যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা চলত। এবং মানবকে প্রায়শই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিত।
স্বামীর আত্মহত্যার পর স্ত্রী নিকিতা শর্মা মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন যে, মানব তার অতীত নিয়ে তাকে দোষারোপ করে যেত। এই বিষয়টি জানার পর মানব মদ্যপ হয়ে গিয়েছিল। প্রায়শই ঝগড়া করত। তিনি দাবি করেন যে, শ্বশুরববাড়ি মানবের এই ব্যবহারের সম্পর্কে জানালে তারা বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দেয়। নিকিতা আরও জানায় যে, মানব আগেও তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁকে বাঁচান। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে আমাকে বাপের বাড়ি রেখে এসেছিল।