জেনে নিন তারকেশ্বর মন্দির সম্পর্কে কিছু অজানা সত্য, যা আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে!
বেস্ট কলকাতা নিউজ : জানা-অজানা বিস্ময়কর কিছু সত্য – আমরা দেবতাদের মধ্যে যাকে সব থেকে বেশি প্রাধন্য দেই এবং যাকে দেবতাদের দেবতা অর্থাৎ দেবাদিদেব বলা হয় তিনি হলেন মহাদেব, অর্থাৎ শিব। শিবের উপাষনার জন্য বাংলার প্রতিটি প্রান্তে শিব মন্দির অবস্থিত। যেখানে শিব কে লিঙ্গ রূপে পুজো করা হয়। বাবার মাথায় জল ঢালা হয়।এই সকল শিব মন্দিরের মধ্যে অন্যতম ও মানুষের ভিড় উপচে পড়ে সেই তীর্থটির নাম তারকেশ্বর। এখানেও বাবা লিঙ্গ রূপেই পুজিত হয়। এখানে সারা বছরই মানুষের ভীড় নামে। কিন্তু শিবের মাস অর্থাৎ শ্রাবন মাসে ভীড়টা বেশি হয়। এই সময় প্রতি সোমবার বাবার মাথায় জল ঢালা, দন্ডি কাটার জন্য ভীড় উপচে পড়ে।
এই তারকেশ্বরের পিছনে লুকিয়ে আছে বহু অজানা ইতিহাস। আসুন সেগুলো জেনে নেই।
১. মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক গুজব শোনা যায় তবে বলা হয় যে বিষ্ণুদাস নামে এক ব্যক্তি বাস করতেন নদীয়ায়। তার ভাই একদিন জঙ্গলে গড়ু চড়াতে গিয়ে এক আশ্চর্য পাথর দেখতে পান। তারপর একদিন বিষ্ণু দাস স্বপ্ন দেখেন যে তার ভাইয়ের পাওয়া পাথরটি ভগবান শিবের এক রূপ, আর সেটি প্রতিষ্টা করতে বলেন। বিষ্ণুদাস স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেখানেই মন্দির নির্মানের কাজ শুরু করেন, যা পরবর্তী কালে তারকেশ্বরের মন্দির নামে পরিচিত হয়।
২. এখানে যে লিঙ্গটি পাওয়া যায় ও প্রতিষ্ঠিত হয় সেটি প্রচলিত লিঙ্গ থেকে অনেকটাই আলাদা। সবাই মনে করেন বাবা নিজেই এই রূপে আবির্ভূত হয়েছেন।
৩. বিষ্ণুদাসের পর এই মন্দিরের প্রধান সন্যাসী ধুম্রপান মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব গ্রহন করেন এবং মন্দিরের দায়ভার নিজের কাধে তুলে নেয়।
৪. বর্তমান মন্দিরটি আটচালা, যার উত্তরদিকে আছে পবিত্র দুধ পুকুর। যেখানে স্নান করলে মনের সকল ইচ্ছা পূর্ন হয় বলে দাবী দর্শনার্থীদের। আটচালা মন্দিরটি ১৭২৯ সালে মল্লরাজারা পুনর্নির্মাণ করেন।
৫. প্রচলিত কথানুযায়ী হিতসাগরে স্বামীর প্রতিপত্তি ও খ্যাতি বৃদ্ধির জন্য মহাদেবকে প্রতিদিন দুধ দিয়ে স্নান করানো হতো। সেই দুধ জমা হতে হতে এই দুধ পুকুরের উৎপত্তি। এই পুকুরের জল দুধের মতো সাদা।
৬. শ্রাবন মাস বাদেও প্রতি চৈত্র মাসে শেষে অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে মানুষের ঢল নানে এখানে। হাজার হাজার পুর্নার্থী পায়ে হেঁটে এসে বাবার মাথায় জল ঢালে মন বাসনা পূর্ন করার জন্য। বলা হয় “এখানেই এসে মেশে সব মত, সব পথ”
৭. এই মন্দির সম্পর্কে আরও কিছু প্রচলিত কথা আছে, শোনা যায় রাজা ভারমল্লদেব এই মন্দির সরানোর চেষ্টা করেন। কারন তার রামনগরের রাজবাড়ি থেকে এই মন্দির বেশ দূরে। তাই রানীর পুজো দিতে অসুবিধা হত। কিন্তু তিনি স্বপ্নাদেশ পান যে বাবার শিবক্ষেত্র থেকে বাবাকে সড়ালে ঘোর অনর্থ হয়ে যাবে। তাই শেষ পর্যন্ত মন্দির ও বিগ্রহ যথাস্থানেই থাকে।।
তারকেশ্বর মন্দির সম্পর্কে এই অজানা তথ্যগুলি প্রথমবার যদি আপনি জেনে থাকেন তো শেয়ার করে বাকীদের জানিয়ে দিন।