অবশেষে শুভেন্দুর হাতে ইডিকে লেখা চিঠি? অভিষেকের সিবিআই তদন্ত দাবি গুরুতর অভিযোগ এনে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : অসম থেকে উত্তরপ্রদেশ, কোনও বিজেপিশাসিত রাজ্যে ইডি বা সিবিআইয়ের মত কেন্দ্রীয় এজেন্সিরা তল্লাশি চালায় না। বেছে কেবল বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলোতেই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো তল্লাশি চালায়। বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে এই গুরুতর অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন শুনতে ভয় পান। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে ভয় পান। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর উচিত দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহি করা। মোদীজির নিউ ইন্ডিয়া মানেই তো পুলিশশাসিত বা বাহিনীশাসিত দেশ।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘নিউ ইন্ডিয়া’র ধারণাকেও তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘মোদীজির নিউ ইন্ডিয়া মানেই তো বিজেপিতে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি। আর, কোনও সিবিআই বা ইডির মামলা সেই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের হয় না। মোদীজির নিউ ইন্ডিয়াকে হত্যাকারী, ধর্ষক, খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়। তাঁদের ফুলের মালা পরিয়ে মঞ্চে অভিবাদন জানানো হয়। আর, সৎ সাংবাদিককে গ্রেফতার করানো হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ জারি করা হয়। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ যখন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, এই সব কাজের জবাব দেবেন।’

ইডি তাঁকে তলব করেছে। সেই প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ইডি আমাকে যে সমন পাঠিয়েছে, আমি তার জবাব পাঠিয়ে দেব। বিষয়টি বিচারাধীন। তাই, আমি এই ব্যাপারে কিছু মন্তব্য করতে চাইছি না। তাছাড়া, আমি তো কোথাও যাচ্ছি না। আমার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, আপনারা দেখতেই পাবেন।’ ইডি এবার তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে তলব করেছে। এই ব্যাপারে অভিষেক বলেন, ‘আমার পরিবারকে আগেও ডাকা হয়েছে। আমায়, আমার স্ত্রীকে, আমার শ্যালিকাকে অন্য মামলাতেও ডাকা হয়েছে। এখন অন্য মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বারণ করেছে। সেখানে রক্ষাকবচ রয়েছে। কিছু করতে পারছে না। তাই অন্য মামলায় ডাকছে। কিন্তু, এটা দুই থেকে আড়াই বছর ধরে চলছে।’

বিমানবন্দর থেকেই ফের ইডিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু থাকলে কোর্টে জমা দিন। কোর্টেও তো বিচারপতি একই কথা বলেছিলেন। কী আছে কেস ডায়েরি, জমা দিন। কেস ডায়েরি দেখার অধিকার একমাত্র তদন্তকারী সংস্থা আর বিচারপতির রয়েছে। তবে, ইডির কী গ্রহণযোগ্যতা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমি ইডিকে কী লিখে পাঠাচ্ছি, সেটা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করছে! আমি এই নিয়েও আগামিদিনে সুপ্রিম কোর্টে যাব। আমার আর, তদন্তকারী সংস্থার মধ্যে কী বিনিময় হয়েছে, সেটা শুভেন্দু অধিকার টুইট করে জানাচ্ছেন। এর একটা সিবিআই তদন্ত হোক না!’

এর পাশাপাশি বিজেপিকেও একহাত নেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘বিজেপি যদি ভাবে যে আমার মা, আমার বাবা, আমার স্ত্রীকে ডেকে, আমাকে ডেকে আমাকে রাজনৈতিক ভাবে দমিয়ে রাখবে, আমার গলা কেটে দিলেও জয় বাংলা বেরোবে। নরেন্দ্র মোদীর কাছে আমি আত্মসমর্পণ করব না। তাঁর যা জেদ, আমার তার ১০ গুণ জেদ। নরেন্দ্র মোদীর জেদ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দমিয়ে রেখে আত্মসমর্পণ করাও। আর, আমার জেদ হল মাথা উঁচু করে তোমার দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন তৈরি করে মানুষের অধিকার, বাংলার অধিকার, তোমার চোখের সামনে আমরা ছিনিয়ে আনব। তোমার ক্ষমতা থাকলে আটকাবে! প্রধানমন্ত্রীর যা জেদ, তার ১০ গুণ জেদ আমার।’

এরপর মোদী ও শাহর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, ‘আমি বলেছিলাম না, পারলে আটকাও, ৩ তারিখ যাব, ৪ তারিখ যাব। কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছি না। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি। যার অধীনে এই তদন্তকারী সংস্থা। ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি। যার অধীনে এই তদন্তকারী সংস্থা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে চ্যালেঞ্জ করছি। আর, এখানকার জমিদারদের লেঠেলবাজদের চ্যালেঞ্জ করছি। আগামিদিনে এই লড়াই তীব্রতর হবে। এটা মানুষের লড়াই। তোমাদের ক্ষমতা থাকলে আটকাও। ৩ ও ৪ অক্টোবর মিটিং হয়েছে, আটকাতে পারনি। আগামিদিনেও মিটিং হবে, আটকাতে পারবে না। মানুষের অধিকার, আমাদের প্রাপ্য টাকা আমরা ছিনিয়ে আনব, যত চেষ্টা কর আটকাতে পারবে না।’

বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘আর, দিল্লিতে যেটা হয়েছে, একটা ছোট্ট ট্রেলার হয়েছে। সিনেমাটা দুই মাস পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে দেখাব। বলেছিলাম যে ৫০ হাজার, ১ লক্ষ লোক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজপথে মিছিল হবে দিল্লিতে, অপেক্ষা করুন দু’মাস। তারপরে দেখবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *