পরম জাগ্রত বিশালাক্ষী মা ,দেবীর চরণামৃত পান করে সেরে উঠেছেন বর্ধমানের মহারাজাও

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : কথিত আছে, স্বয়ং দেবী বিশালাক্ষী কুমারী রূপে শাঁখা পরতে এসেছিলেন এই মন্দিরে। অলৌকিক কর্মকাণ্ডে ভরা মন্দিরটি এই রাজ্যেরই। মন্দিরটি রয়েছে, হুগলি জেলার পোলবার দাদপুর ব্লকের সিনেট গ্রামে। অনেকে এই গ্রামকে ডাকেন সেনেট বলেও। গ্রামটির আগের নাম ছিল সেনহাটি। এখানে দ্বিভুজা রূপে অবস্থান করছেন বাংলার লৌকিক দেবী বিশালাক্ষী। এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হালদাররা। তাঁরা দেবীর পুজোর ব্যবস্থা করেছিলেন উত্তরপাড়া থেকে পুরোহিত নিয়ে এসে।

কথিত আছে, একবার রোগে সংকটাপন্ন হয়ে পড়েন বর্ধমানের মহারাজা। মহারাজার এক কর্মচারী পোলবায় থাকতেন। তিনি দেবী বিশালাক্ষীর চরণামৃত এবং প্রসাদী ফুল তুলে দেন মহারাজের হাতে। মহারাজার রোগের উপশম হয় সেই চরণামৃত গ্রহণের পর। বর্ধমানের মহারাজাই পুরোনো মন্দিরের বদলে দেবীর বর্তমান মন্দিরটি বানিয়ে দিয়েছিলেন আরোগ্য লাভের পর । সেই সঙ্গে, বিপুল পরিমাণ জমিও দান করেছিলেন এই মন্দিরের কাজকর্ম চলার জন্য।

মহারাজা ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি করে দিয়েছিলেন বাংলার নিজস্ব চালা স্থাপত্য ধারার জোড়বাংলা রীতির এই মন্দিরটি । মন্দিরের সামনে রয়েছে টিনের চালে ঢাকা নাটমঞ্চ। গর্ভগৃহের সামনে আছে ত্রিখিলান অলিন্দ। আগে টেরাকোটার শিল্প ছিল অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির ওপর স্থাপিত এই মন্দিরের গায়ে । এখন অবশ্য তার কিছুই নেই। মন্দিরের পাশে রয়েছে বহু পুরোনো এক বিশাল পুকুর। কথিত আছে, দেবী সেই পুকুরের ধারে এক শাঁখারির থেকে কুমারী রূপে শাখা পড়ে দাম আনতে যাচ্ছি বলে চলে যান স্থানীয় হালদার বাড়িতে ।

শাঁখারি হালদার বাড়িতে দাম আনতে যান বহুক্ষণ পরও মেয়েটি না-ফেরায়। কিন্তু, শাঁখারি মেয়েটির কথা বলার পর হালদার কর্তা অবাক হন। কারণ, তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। অবশ্য সেই রাতেই হালদারকর্তা নাকি স্বপ্নাদেশ পান, পুরোনো পুকুরে দেবীর শাঁখাপরা হাত দেখতে পাবেন। আর, দেবীকে পুকুরের পাশে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এরপরই দেবীর মূর্তিটি স্থাপন করেন হালদার বাড়ির কর্তা। কথিত আছে, এই অঞ্চল দিয়ে এক সময় বয়ে যেত কেদারমতী নদী। তার একপারে (উত্তর দিকে) ছিল দেবী দ্বারবাসিনী বিষহরির মন্দির। আর, দক্ষিণ দিকে ছিল সিনেটের বিশালাক্ষীর মন্দির। এই দুই দেবী, দুই বোন হিসেবে কল্পিত ভক্তদের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *