ফলহারিণী কালীপুজো, জেনে রাখুন কী তার রীতি, নিয়ম এবং আচার
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বাংলায় দেবী কালী নানারূপে বিরাজিতা। কোথাও তিনি দক্ষিণাকালী, কোথাও আবার ভদ্রকালী। কোথাও বা সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্মশানকালী, মহাকালী কিংবা রক্ষাকালী। একেক ভক্তের কাছে দেবী যেন একেক রূপে ধরা দিয়েছেন। কেউ দেবীকে ডাকেন আনন্দময়ী, কেউ বা ডাকেন ব্রহ্মময়ী। কেউ আবার ডাকেন ভবতারিণী রূপে। শাক্ত মতে, প্রতি অমাবস্যা তিথিতেই দেবী কালীর আরাধনা করা হয়। তার মধ্যে একেক অমাবস্যা নির্দিষট রয়েছে দেবীর একেক রূপের আরাধনার জন্য। যেমন কার্তিক মাসের অমাবস্যায় হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। তেমনই জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় হয় ফলহারিণী কালীপুজো।
ফলহারিণী কালীপুজো : ফলহারিণী কালীপুজো। যাঁরা দেবী কালীর ভক্ত, তাঁরা সারা বছর এই পুজোর সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ, এই পুজোর তিথি অত্যন্ত শুভ। অতি পুণ্য অমাবস্যা। যে তিথিতে দেবীর চরণে সব কর্মফল সমর্পণ করতে হয়। আর, ভক্তের অর্জিত সমস্ত অশুভ কর্মফল হরণ করেন দেবী। সেই কারণে দেবীর নাম ‘ফলহারিণী’। জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালীপুজো হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই পুজোর ফলে ঘটে যায় বহু অলৌকিক ঘটনা। সেই কারণে ফলহারিণী কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা কাহিনিও।
বিশেষ রীতি ও ফল : মরশুমি ফল (আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, তরমুজ, তালশাঁস) দিয়ে এই পুজো করাই রীতি। দেবীকে নানারকম মরশুমি ফল দিয়ে পুজো করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই পুজোয় রোগব্যাধি দূর হয়, বিদ্যালাভ এবং যশোলাভ হয়। কর্মক্ষেত্রে এবং অর্থভাগ্যের উন্নতি ঘটে থাকে। সাংসারিক এবং দাম্পত্যক্ষেত্রে অশান্তি দূর হয়। দেবীর কৃপায় অভীষ্ঠ ফললাভ হয়। এই পুণ্যতিথিতে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক জাগরণও ঘটে থাকে।
শ্রীরামকৃষ্ণও করেছিলেন : শ্রীরামকৃষ্ণের ভক্তদের কাছে ফলহারিণী কালীপুজোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, ১২৮০ বঙ্গাব্দে এই বিশেষ রাতেই শ্রীরামকৃষ্ণ দেবী সারদাকে ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন। সেই থেকে রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনে ফলহারিণী কালীপুজো বিশেষ গুরুত্ব পায়। রামকৃষ্ণের ভক্তদের কাছে এই পুজো ষোড়শী পুজো নামেও পরিচিত।