বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা প্রদানকারীদের জীবনে আঁধার নেমেছে করোনায়

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : রাজ্যে আবারও লকডাউনের মতো পরিস্থিতি শুরু হয়েছে করোনা মোকাবিলায়। অধিকাংশ কাজকর্ম ও ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের চালু করা কড়া বিধিনিষেধে। ফলে ছোট-বড় সব ব্যবসায়ী চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন । সংক্রমণের ভয়ে মানুষ যেমন নিজেদের গৃহবন্দি করেছেন, আগের মতো তেমনই একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত একেবারে নেই বললেই চলে। প্রথম দফায় লকডাউন উঠে গিয়ে আনলক-পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই তৈরি হয়েছে এই পরিস্থিতি৷ তাঁদের পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই যাঁরা ইলেকট্রিকের মিস্ত্রি, প্লাম্বার, এসি-টিভি বা কম্পিউটার সারাইয়ের মিস্ত্রি, পরিচারিকা কিংবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অন্য কাজ করেন। কারণ, এখন কেউ নিজের বাড়িতে বাইরের কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না খুব প্রয়োজন ছাড়া।গেটে নিষেধাজ্ঞা ছাপার অক্ষরে লাগিয়েও দেওয়া হয়েছে বড় আবাসনগুলিতেও।

রোজগার একরকম অনিমিয়ত সমাজের এই শ্রেণির মানুষের৷ দিন আনি, দিন খাই এর মতো পরিস্থিতি৷ ফলে সঞ্চয় তো কিছুই নেই ৷ উল্টে দু’বেলার খাবার জোগাড় করাই সবচেয়ে সমস্যার হয়ে ওঠে একদিন রোজগার না হলে৷ তেমনই একজন হল ষাটোর্ধ্ব ইলেকট্রিক মিস্ত্রি৷ যিনি রোজ ২ ঘণ্টা সাইকেলে চেপে কাজের সন্ধানে কলকাতা শহরে আসেন৷ তিনি কথায়, “বাড়িতে অসুস্থ রোগী । তাঁর ওষুধ তো কিনতে হবে । আর কেউ নেই রোজগার করার। তাই আমি কাজে আসি প্রতিদিন প্রায় ২ ঘন্টা সাইকেল চালিয়ে।”

গ্রিলের কাজ করেন এমন একজন এর কথায়, ” গ্রিল সারাইয়ের কাজ করি বাড়ি বাড়ি গিয়ে। আর কোনও নতুন নির্মাণ হলে কাজ করি সেখানেও । তবে কেউ এখন কারও বাড়িতে ঢুকতেই দিচ্ছে না। আর ফের লকডাউনে বন্ধ সমস্ত নির্মাণ কাজ।দিন কাটছে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে। আর অন্য কোনও কাজও শিখিনি যে এই সময় করতে যা পারব।” আর একজন বরুণ পাল ৷ তিনি পেশায় প্লাম্বার ৷ তিনি জানান ,”আর্থিকভাবে খুবই দুর্দশার মধ্যে আমরা রয়েছি। সংসার চলছে কোনও মতে। ব্যবসার অবস্থাও খুব শোচনীয় । করোনার আগে কাজের জন্য আমাদের ডাক পড়ত স্থানীয় অনুষ্ঠান বাড়িগুলোতেও । তবে এই দু’বছর হল তাও আর নেই। খুবই শোচনীয় আমাদের অবস্থা।”

এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ আজ কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েছেন । তাকিয়ে রয়েছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *