বাম জামানার দুর্নীতি নিয়ে এবার অকপট স্বীকারোক্তি প্রাক্তন ‘কমরেড’ আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার গলায়

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্ত শুরু করেছে তৃণমূল সরকার । যার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং । শীঘ্রই সামনে আসবে বামেদের দুর্নীতির শ্বেতপত্র, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবসু এমনটাই বলেছিলেন। এদিকে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেছেন সেই তালিকা দেখা যাবে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই । এদিকে চাকরি সুপারিশে তৃণমূল নেতারা জড়িয়ে দিয়েছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নামও । ‘সব পাপ সিপিএম জমানা থেকে শুরু’, এ কথা বলছেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ । এককালে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা এই তৃণমূলই করতেন দাপটের সঙ্গে । উঠে এসেছিলেন কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এবার সেই রেজ্জাই বলছেন। হ্যাঁ, দুর্নীতিতো হয়েছিলই । কোনও ছেলে পার্টির হোলটাইমার হলে বাম জমানায় তাঁর বউকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা হতো ।

সংবাদমাধ্যম কে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে পুরোনো দল নিয়ে একরাশ অভিমানও ঝরে পড়ল রেজ্জাকের গলায়। সেই সঙ্গেও খানিক ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূল নিয়েও । বললেন, “এককালে, মানে ২০১১ সালের আগে সিপিএম পার্টিটা ছিল আন্দোলন নির্ভর, সংগঠন নির্ভর। আস্তে আস্তে তারপর দেখলাম সরকার নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। তখন থেকেই আমি সরে আসতে শুরু করলাম।” কিন্তু, এত বিতর্ক, এত জল্পনার মধ্য়ে প্রশ্ন তো একটাই সাদা জামা, সাদা পাঞ্জাবির বাম নেতাদের গায়ে কী লেগেছিল দুর্নীতির কালো দাগ?

উত্তর দিতে গিয়ে ফিরে গেলেন স্মৃতির পাতায়। তারপর খানিক ভাবুক চোখে রেজ্জাক বললেন, “বাম আমলে শিক্ষায় এত দুর্নীতি ছিল না। তবে ওদের চাকরি-টাকরির ব্যাপারে একটা ব্যাপার ছিল। কোনও ছেলেকে যদি হোলটাইমার করা হতো তখন চাকরি দেওয়ার চেষ্টা হতো ওর বউকে বা নিকট আত্মীয়কে। আমাদের জেলায় এই চেষ্টা অন্তত হয়েছিল সেটা আমি জানি। তখন আমার মনে হয়েছিল এটাই ঠিক। একটা বুদ্ধিমান ছেলে হোলটাইমার হয়ে মাসে ২-৩ হাজার পাবে তাতে তো তার সংসার চলবে না। কাজেই সেখানেএকটা সুরাহা হতো বিকল্প হিসাবে তাঁর নিকট আত্মীয় বা স্ত্রীকে চাকরি দিলে ।”

যদিও বর্তমানে তাঁর বর্তমান দল তৃণমূলের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ নেই। উল্টে পুরনো কমরেডরা যে এখনও খোঁজ নেন সে কথা অকপটেই বললেন তিনি। খানিক অভিমান মিশ্রিত কণ্ঠে বলতে লাগলেন, “এখন যে পার্টি আমি করি সেই তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ২০১৬ সালে ভাঙড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেছিলাম। কিন্তু, আমার বাড়ি ক্যানিং পূর্বের দিকে, আর ভাঙড় অনেক দূর। তাই এখন সম্ভব নয় দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তা বলা। ওরাও খুব একটা বিশেষ আসে না। তবে রোজই যোগাযোগ রাখে । দেখা করে যায়। নানা পরামর্শ চায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *