বুক চিতিয়ে উত্তরপত্র বাচালো রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদের পরীক্ষার্থী যুবক

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

সুমন কারাতি, হুগলী : রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল এর পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র নিয়ে ফেরার পথে আক্রান্ত হল উত্তরপত্র বোঝাই গাড়িটি। রবিবার দুপুরে হুগলির বৈদ্যবাটি ঘাটের কাছে গাড়িটি আক্রান্ত হয় ।গাড়িতে টাকা আছে ভেবে উত্তরপত্র সমেত গাড়িটিকে ভাঙচুর করে হুগলির শেওড়াফুলি দিয়ে তারকেশ্বরে জল ঢালার জন্য যাওয়ার পথে একদল পুণ্যার্থী। সেই সময় রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়ে ওই গাড়ির পিছনে ফিরছিল হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা সুপন হালদার । সেই পরীক্ষার্থীর গাড়ি সহ দুটি মারুতি গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা।শেওড়াফুলির বনমালি স্কুলে কনস্টেবলের পরীক্ষার সিট পড়েছিল রবিবার।পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র নিয়ে একটি মারুতি গাড়ি বেরোয়।সেই গাড়ির পিছনে হাওড়া সালকিয়া থেকে আসা পরীক্ষার্থী সুপন হালদারের মারুতিও রওনা দেয়।রবিবার হওয়ায় শেওড়াফুলি গঙ্গার ঘাটগুলো জলযাত্রীদের থিকথিকে ভীর।রাস্তাতেও হাজার হাজার জলযাত্রী।কোনো ভাবে ভীড় ঠেলে গাড়ি দুটি এগোনোর চেষ্টা করে।তখনই জলযাত্রীদের সঙ্গে বচসা থেকে মারামারি বেঁধে যায় উত্তরপত্র বোঝাই গাড়িচালকের ।মারমুখি জলযাত্রীরা দুটি গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।জল নেওয়ার পিতলের ঘটিগুলি দিয়ে গাড়ির বনেট এবং কাঁচ ভাঙচুর করে । মারধর করে গাড়ির চালকদের।পরীক্ষার উত্তরপত্রকে টাকা আছে ভেবে লুট করার চেষ্টা করা হয়। জল যাত্রীরা গাড়ির কাগজপত্র লুটপাটের চেষ্টা করছে পিছনের গাড়ি থেকে বুঝতে পেরে তা আটকাতে যায় 21 বছরের যুবক সুপন । তখন জল যাত্রীরা তাকেও ব্যাপক মারধর করে। তার শরীরের মধ্যে কাঁচের টুকরো ঢুকে যায় ।কিন্তু মার খেয়েও সে কোনো ভাবে তা আটকায়। সে গাড়ির উপর শুয়ে পড়ে। এরপর উত্তেজিত জনতা তাকে সরাতে গেলেও সে কোন ভাবে সরেনি ।উল্টে তাদের বোঝাতে থাকে যে এর মধ্যে কোন টাকা নেই ।উত্তর পত্র রয়েছে। দুপুর তিনটের সময় ঘটনাটি ঘটে ।তখন থেকে দফায় দফায় তাদের গাড়ি আক্রমণ করে জল যাত্রীরা। এবং যানজটে আটকে যায় গাড়ি দুটি ।পরে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ খবর পেয়ে উত্তরপত্র বোঝায় গাড়িটিকে সেখান থেকে বার করে দেয়। কিন্তু সুপনের গাড়িটি আটকে পড়ে । দিনভর সুপন না খেয়ে সেই গাড়ির মধ্যে আটকে থাকে । পরে শ্রীরামপুর থানার পুলিশের সহযোগিতায় রাত দশটা নাগাদ সুপনের গাড়িটিকে উদ্ধার করে বড় রাস্তায় বার করে দেয় । জখম অবস্থায় সুপন মাঝ রাতে সালকিয়ার বাড়িতে ফিরে এসে জানায় তার বাবা পুলিশ ছিল ।তাই সেও পুলিশে চাকরি করতে চায় ।এবং পুলিশ হয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে চায়। তাই সে পুলিশের চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল ।কিন্তু এদিন যেভাবে উত্তরপত্র বোঝাই গাড়ীটি আক্রান্ত হয়, তার মনে হয়েছিল অনেক বেকার যুবকের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে আছে এর মধ্যে ।এমন কি তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্নও রয়েছে এই গাড়ির মধ্যেই ।তাই জীবন দিয়ে উত্তরপত্র গুলোকে বাঁচানোই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য ।তার নিজের গাড়িটিও উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *