যে মন্দিরে এলে সুস্থ হন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীরাও , মা সারদামণিও যেখানে এনেছিলেন তার একাধিক আত্মীয়কেও

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : কথিত আছে শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের স্ত্রী সারদামণি তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন বউদিকে নিয়ে দেবী ক্ষ্যাপাকালীর মন্দিরে এসেছিলেন তাঁর সুস্থতার আশায়। তিনি দেবীর কৃপায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর সারদামণি তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ভাইঝিকে নিয়েও এখানে সুস্থ করার জন্য এসেছিলেন। শুধু দেবী সারদাই নন। দেশের নানা প্রান্ত এমনকী বিদেশ থেকেও মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের আত্মীয়রা এই মন্দিরে ছুটে আসেন রোগীদের সুস্থ করতে। গত ৭০০ বছর ধরে এভাবেই হুগলির আরামবাগের তিরোল ক্ষ্যাপা কালী মন্দির অসংখ্য মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের পরিবারের ভরসা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘তিরোলের বালা’তেও দেবী ক্ষ্যাপাকালীর গল্প রয়েছে।

দেবী আসলে সিদ্ধেশ্বরী কালী। কিন্তু, মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের ভরসাস্থল হয়ে ওঠায়, সেই মন্দিরই হয়ে উঠেছে ক্ষ্যাপাকালী মন্দির। তিরোলের চক্রবর্তী জমিদার বাড়িতে এই মন্দির। সদাজাগ্রত দেবী এখানে তাঁর দুই সখী ডাকিনী ও যোগিনীকে নিয়ে বিরাজমান। মানসিক ভারসাম্যহীনদের সঙ্গেই মৃগীরোগীরাও এখানে দেবীর আশীর্বাদে সুস্থ হয়ে যান মাত্র একবছরের মধ্যে। এমনটাই দাবি ভক্তদের। এজন্য বিশেষ কিছু করতে হয় না রোগীকে। কিছু খাবার আগে দেবীর পুজোর বেলপাতা মন্দির থেকে দিয়ে দেওয়া হয়। সেই বেলপাতা রোগীকে যে কোনও কিছু খাবার আগে খেতে হয়। এই ধরনের কিছু ছোটখাটো নিয়ম আর, এখানকার বালা পরেই সুস্থ হয়ে যান রোগীরা।

তারকেশ্বরের দশঘড়ায় বিশ্বাস পরিবারে অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোয় দুর্গাপ্রতিমাকে পরানো মুকুটটি দীপাবলির সময় ক্ষ্যাপাকালীর বিগ্রহের মাথায় পরানো হয়। স্বপ্নাদেশে এমনটাই রীতি চলে আসছে এখানে। শুধু তাই নয়, দীপাবলির সময় দেবীর প্রিয় সানাই বাজানোর রীতিও রয়েছে এই মন্দিরে। দেবীর বিগ্রহটি মাটির তৈরি। যা ২০ থেকে ২৫ বছর অন্তর বদলানো হয়। কথিত আছে এক সাধু এই দেবী ক্ষ্যাপাকালীর আরাধনা করতেন। মৃত্যুপথযাত্রী সাধু দেবীর স্বপ্নাদেশে তিরোলের তৎকালীন জমিদার চক্রবর্তী পরিবারের হাতে দেবীর আরাধনার ভার দিয়ে যান। তারপর থেকে গত ৭০০ বছর ধরে এই মন্দিরে চলছে দেবী সিদ্ধেশ্বরী বা ক্ষ্যাপাকালীর আরাধনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *