বর্ধমানের এ গ্রামের নাম জুড়ে আছে পুরীর রথের সঙ্গে , পুরীতে রথের জন্য দড়িও যেত এ গ্রাম থেকেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো রথ। সেই রথের রশিতে আজও টান পড়ে, আর এই রথযাত্রাকে ঘিরে হইহই চলে গ্রামে। বাংলায় মাহেশ কিংবা মহিষাদলের রথের কথা সকলেরই জানা। কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের রথও বহু ঐতিহ্যের সাক্ষী। এলাকার লোকজনের কাছে শোনা যায়, ৫০০ বছর আগের ঘটনা। ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কাব্যের রচয়িতা মালাধর বসুর ছেলে লক্ষ্মীকান্ত বসুকে পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ টানার জন্য বর্ধমানের কুলিনগ্রাম থেকে রথের দড়ি আনার নির্দেশ পান।

লক্ষ্মীকান্ত বসু কুলিনগ্রাম থেকে সেই রথ টানার দড়ি নিয়ে যান পুরী। তারপর থেকে জামালপুরের কুলিনগ্রামেও রথযাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে চলে আসছে। প্রায় পাঁচ দশক হতে চলল এই উৎসবের। ৮ দিনের পরিবর্তে ৯ দিনের রথ হয় এখানে। ততদিন বিগ্রহ মাসির বাড়ি থাকে।এলাকার লোকজনই বলেন, একটা সময় নিয়মিত পুরীতে কুলিনগ্রাম থেকে রথের দড়ি যেত। তবে ধীরে ধীরে তা বন্ধ হয়ে যায়। বদলে পাট ও শন দিয়ে তৈরি বিশেষ দড়ির উপকরণ একটি প্যাকেটে ভরে তা পাঠানো হতো পুরীতে। মূল দড়ির সঙ্গে ওই উপকরণকে ছুঁইয়ে নেওয়া হতো।

যদিও সময়ের স্রোতে তাও হারিয়েছে। বসু পরিবারের সদস্যরা নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় তা এখন আর পাঠানো হয় না। তবে এ গ্রামে এখনও রথ হয় ধুমধাম করেই। কাঠের তৈরি রথের উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে প্রায় ১৬ ফুট। রয়েছে ৬টি লোহার চাকা। তিনটি ধাপ রয়েছে রথে। পাঁচ চূড়া বিশিষ্ট এই রথের উপরের ধাপে থাকেন জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রা। রথের দিন গ্রামের মাঝে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির থেকে বিশেষ পুজো করে রথকে টেনে আনা হয় গ্রামের রথতলায়। ফের নিয়ে আসা হয় জগন্নাথ মন্দিরে। উল্টোরথেও একইভাবে রথ টানা হয়।মেলা কমিটির সদস্যদেবব্রত সিংহ বলেন, “চৈতন্যদেব যখন এসেছিলেন তখন থেকে এই রথ। সেই থেকে রথ চলে আসছে। ৫০০ বছরের বেশি সময় হয়ে গেল। পট্টডোর এক সময় পুরীতে যেত। তা বিলুপ্ত হয়। তবে আমরা আবার সেই প্রথা ফেরাতে চাইছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *