অবশেষে শুরু হল প্রসিদ্ধ ও সুপ্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ বোল্লা রক্ষা কালীর পুজো

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

জয়দীপ মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুর: প্রসিদ্ধ ও সুপ্রাচীন উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ঐতিহ্যপূর্ণ বোল্লা রক্ষা কালী’ বা ‘বোল্লা কালী’ পুজো শুরু হল। শুক্রবার সাড়ম্বরে পূজিত হলেন “বোল্লা” কালী। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বোল্লা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্য ও মাহাত্ম্য সমৃদ্ধ রক্ষা কালী মন্দির বোল্লা কালী বলেই সুপ্রসিদ্ধ।প্রতিবছর রাসপূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয় ও সোমবারে মায়ের বিসর্জন হয়। এই কয়েকদিন যাবৎ মায়ের পুজোকে ঘিরে এলাকা উৎসব মুখর হয়েছে থাকে। এছাড়াও সারাবছর নিয়মের সাথে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও মঙ্গলবারে পুজো হয়। এই মেলা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ঐতিহ্যপূর্ণ। দুই দিনাজপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্য, এমনকি বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন।

উল্লেখ্য, গত দু’বছর ধরে চলতে থাকা করোনা আবহের জেরে এবছর বোল্লা কালী পুজো হলেও করোনা বিধির কথা মাথায় রেখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রশাসনের তরফে জারি নির্দেশিকার পর গত বছরও হয়নি মেলা। এবারও হয়নি মেলা সাথে মানতের পাঁঠা বলিও হয়নি বলে সূত্রের খবর। তবে করোনা প্রটোকলকে প্রাধান্য দিয়ে বোল্লা কালী পুজো সাড়ম্বরে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।প্রসঙ্গত, বল্লভ মুখোপাধ্যায় বলে জমিদারের নাম থেকে অঞ্চলটির নাম হয় বোল্লা। বোল্লা গ্রামে অবস্থিত রক্ষা কালী ‘বোল্লা রক্ষা কালী’ বা ‘বোল্লা কালী’ নামে ভক্ত মহলে সুপ্রসিদ্ধ।আর সে থেকেই বোল্লা কালী পুজো হয়ে আসছে ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহ।

শুক্রবার এই জাগ্রত বোল্লা পুজো শুরু হল যাকে ঘীরে এলাকা সহ জেলাবাসীদের মধ্যে খুশির আবহের সৃষ্টি হয়েছে। এই বোল্লা কালী পুজোর প্রধান প্রসাদ “কদমা ও বাতাসা”। বাতাসার মধ্যে বিভিন্ন প্রাণীর আকারের অবয়বে প্রসাদ প্রস্তুত করা হয়। পাশাপাশি মানতের বিভিন্ন আকারের ছোট-বড় বোল্লা কালীর পুজো দেওয়া হয়। বোল্লা কালীর হাতে থাকে আড়াই টনের সোনার রামদা এবং মন্দিরের সমস্ত অলংকার। পুজো প্রাঙ্গণে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকের কয়েকশো পুলিশ প্রহরায় থাকছে পাশাপাশি মন্দির চত্বর সিসিটিভির আওতায় থাকছে। প্রতিবছরের ন্যায় বোল্লা এলাকায় মায়ের পুজোকে ঘীরে যে সম্প্রতির মেলবন্ধন ঘটে তাকে ঘিরে আনন্দ মাতছে জেলার মানুষরা। বোল্লা এলাকায় সকল শ্রেনীর মানুষ পুজোকে নিয়ে ব্যাস্ত। তবে এবছর কোনওরকম মেলা না হওয়ায় লক্ষ্মীর ভাঁড়ে টান পড়েছে বলে জানালেন জনৈক এলাকার বাসিন্দারা।

পাশাপাশি করোনা আবহের জেরে এবছর সমস্ত কিছুতেই ভাটা পড়েছে বোল্লা পুজোয়। তাছাড়া বোল্লা মন্দির চত্বরও বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সারা বছর ধরে প্রতীক্ষা করে থাকা এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মন খারাপ। আর তাদের দেখা গেল পুজো প্রাঙ্গণে মায়ের উদ্দেশ্যে নতমস্তকে। তারা মনে মনে করোনা মহামারী পৃথিবী থেকে চিরতরে মুক্ত করবার অনুরোধ জানাচ্ছেন তা বলাই বাহুল্য। তবে এবছর করোনা বিধির মান্যতা দিয়ে সাড়ম্বরে শুরু হল বোল্লা কালী পুজো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *