জাগ্রত দেবীর টানে দেশ বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন রায়গঞ্জের আদি করুণাময়ী কালী মন্দিরে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন শহর রায়গঞ্জ। আর এখানেই রয়েছে জাগ্রত করুণাময়ী আদি কালী মন্দির। কথিত আছে ৫০০ বছরের বেশি পুরোনো এই দেবীর পুজো । তাতে অবশ্য ভক্তদের ভক্তিতে ঘাটতি পড়েনি বই বেড়েছে। কারণ, বহু অলৌকিক কাহিনি রয়েছে এই মন্দিরকে ঘিরে । জানা যায় প্রায় ৫০০ বছর আগে কুলিক নদীর তীরে তন্ত্রসাধনা করতে এসেছিলেন এক পঞ্জাবি সাধু। তিনি এখানে সাধনা শুরু করেছিলেন একটি পঞ্চমুণ্ডির আসন তৈরি করে। ভক্তদের দাবি, ওই সাধু সিদ্ধিলাভ করেছিলেন কুলিক নদীর তীরে তৈরি পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসেই ।
পরে এই পঞ্চমুণ্ডির আসনে ঘট প্রতিষ্ঠা করে কালীপুজো শুরু করেছিলেন ওই সাধু। রায়গঞ্জবাসী আজও চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেই পুজো। ভক্তদের বিশ্বাস , এখানে দেবীর অপার মহিমা। প্রায়ই ভক্তরা দেবীর পায়ের নূপুরের শব্দ শুনতে পেতেন। অচিরে এই পঞ্জাবি সাধুর পীঠস্থানের মহিমার কথা ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে। ১৮০৯ সালে মহারাজা দীননাথের বংশধর শংকরনাথ চৌধুরী দেবীর মন্দির তৈরি করে দেন পঞ্চমুণ্ডির বেদি ঘিরে। বেনারসের শংকরাচার্য মঠের সাধু সত্যানন্দ তীর্থ দণ্ডস্বামী এই মন্দিরে একটি কষ্টিপাথরের মূর্তি নিয়ে আসেন বেনারস থেকে । সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় এই মন্দিরে । তারপর থেকে দেবীর পুজো হয়ে আসছে এই মূর্তিতেই।
রায়গঞ্জের এই মন্দির আদি কালীমাতা মন্দির নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে । সেকথা মাথায় রেখে ওই দিন বড় করে উৎসব আয়োজিত হয় এই মন্দিরে। আজও এখানে সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরেরা বংশ পরম্পরায় পুজো করে আসছেন। অসম থেকে পঞ্জাব, বিহার থেকে উত্তরপ্রদেশ, বিভিন্ন ভিনরাজ্য থেকে ভক্তরা যাতায়াত করেন এই মন্দিরে। বিদেশ থেকেও আসেন বহু ভক্ত। এখানে ভক্তদের ঢল নামে দীপাবলির পুজোর সময় । এখানে দেবী তন্ত্রমতে পূজিতা হন। দেবীকে শোলমাছ ভোগ দেওয়া হয়। কথিত আছে, দেবীর কাছে মানত করলে তা পূরণ হয়।