কোনো গোলা-বারুদ নয়, কাশ্মীর সীমান্তে ইকবালের ‘অন্য এক লড়াই’ চারাগাছ হাতে নিয়ে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ভূস্বর্গ’, হ্যাঁ, পৃথিবীর বুকে যদি কোথাও স্বর্গ থাকে, সেটা কাশ্মীরেই। যাঁরা কাশ্মীরে পা রেখেছেন, প্রত্যেকেই এই কথা বলেছেন। তবে, বর্তমানে উপত্যকা জুড়ে গাছ কাটা চলছে। তার উপর রয়েছে গোলাগুলি-বোমা। যার জেরে, বিভিন্ন সময়ে আগুন ধরে যায় বনাঞ্চলে। ফলে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সবুজ। অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো ‘ভূস্বর্গ’ কথাটা শুধু প্রবাদ বাক্য হয়েই থেকে যাবে। কাশ্মীরে ‘স্বর্গ’কে আর উপভোগ করা যাবে না। এই অবস্থায় কাশ্মীর উপত্যকায় সবুজায়নের লড়াইয়ে নেমেছেন ইকবাল লোন। জম্মু-কাশ্মীরের উরির বাসিন্দা। গত ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে, উপত্যকায় গাছের পর গাছ লাগিয়ে চলেছেন এই ব্যক্তি।

উরিতে তাঁর একটি নিজস্ব নার্সারি এবং একটি গ্রিন হাউস রয়েছে। কাজেই গাছ-গাছালির প্রতি তাঁর ভালবাসা দীর্ঘদিনের। আর এই ভালবাসা থেকেই ভুস্বর্গে বৃক্ষরোপনের কাজ করে চলেছেন তিনি। সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে বড়পুল্লা এবং লাদাখের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর কর্মকাণ্ড। মূলত চিনার এবং দেবদারু গাছ লাগান ইকবাল লোন। তিনি জানিয়েছেন, আসলে এই গাছগুলি লাগানোর দুটি সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এই গাছগুলি ২০০ থেকে ৩০০ বছরেরও বেশি বাঁচে। তাছাড়া, এই গাছগুলি কাটতে গেলে সরকারি অনুমতি লাগে। একেক বছরে ইকবাল লোন এবং তাঁর সঙ্গীরা পাঁচ থেকে ছয় হাজার বৃক্ষরোপণ করে থাকেন। ফলে একের পর এক এলাকা সবুজে সেজে ওঠে।

ইকবাল লোন বলেছেন, “গোলাগুলি বা বোমা বিস্ফোরণের জের অনেক সময়ই জঙ্গলে আগুন লেগে যায়। ফলে জঙ্গলের অত্যন্ত ক্ষতি হয়। আমার ধারণা, এই ভাবে উপত্যকার প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বনাঞ্চলের ক্ষতি হয়েছে। তবে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। একেক মরশুমে আমরা প্রায় ৫ হাজার, কখনও বা তার বেশিও চিনার গাছ লাগাই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে শুরু করে প্রায় কার্গিল পর্যন্ত গাছ লাগাতে পেরেছি। চিনার গাছ লাগানোর সবথেকে বড় সুবিধে হল, চিনার গাছের আয়ু। এই গাছ প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছর বাঁচে। আজাদির অমৃত মহোৎসব পালনের সময় আমাদের প্রত্যেকের উচিত জঙ্গলের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য় নেওয়া। জল-জঙ্গল-জমি ছাড়া মানব জীবন কল্পনাই করা যায় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *